ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

ঢাকা: কোটা আন্দোলন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান৷ 

রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি৷ 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন, সেটি তারা জানিয়েছিলেন। এ কারণে তাদের নিরাপত্তার জন্যই হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। নিরাপত্তা ঝুঁকিমুক্ত হওয়ার পরেই তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করা হবে।

তিনি বলেন, কখনো বলা হচ্ছে ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আসলে মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ছাত্র কতজন এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। আরও যাচাই করে তথ্য জানানো হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৪৭ জন মারা গেছে বলে আমাদের হিসাবে রয়েছে। এখানে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ রয়েছে, বিভিন্ন বয়সের মানুষ রয়েছে। ‌ বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়ের মানুষ রয়েছেন। বিভিন্ন হাসপাতাল, বিভিন্ন জেলা থেকে নিহতের এ সংখ্যা পাওয়া গেছে। এছাড়া নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। কখনো বলা হচ্ছে ৫০০, কখনো বলা হচ্ছে ১০০০। সেজন্য আমাদের কাছে যে হিসাব সেটি আমরা দিলাম।

নিহতের সংখ্যা নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলছেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এই কয়দিনের আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের একটা তালিকা আমাদের কাছে আছে। এটি আমরা আরও যাচাই-বাছাই করছি। মৃতের সংখ্যা নির্ণয়ে আরও অনুসন্ধান চলছে। নিহতদের মধ্যে কতজন নারী, কতজন পুরুষ কিংবা কোন পেশার মানুষ কতজন- সেটি নির্ধারণের কার্যক্রমও চলছে। আরও যদি দু-একজনের খবর পাই তবে তা আমরা অন্তর্ভুক্ত করব।

তিনি বলেন, দোষী ব্যক্তিদের আমরা অবশ্যই শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। আমরা কাউকে এখানে ছাড় দেব না।

মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, বর্বরোচিত আক্রমণ পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ দেখেছে বলে আমার মনে হয় না। আমরা এ-ও দেখেছি তারা একটা হসপিটাল পর্যন্ত রেডি রেখেছে, কেউ ইট কিংবা লাঠির আঘাতে আহত হলে তাদের সেখানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আবার তাদের ভালো করে আরেক দল এসেছে। আগে থেকে একটা প্ল্যানওয়েতে আক্রমণগুলো করেছে।

এ সময় মন্ত্রী সাংবাদিকদের পুলিশকে হত্যার বিভিন্ন ছবি দেখান। পুলিশ যখন পারছিল না, তখন সেনাবাহিনীকে ডাকা হয় এবং কারফিউ জারি করা হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ক্রমে দেশ স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ক্রমেই আমরা সান্ধ্য আইন শিথিল করছি, যখন আরও স্বাভাবিক হয়ে যাবে তখন আমরা কারফিউ উঠাতে সক্ষম হবো।

পুলিশকে যেভাবে পৈশাচিকভাবে মেরেছে। একইভাবে আমরা দেখেছি আত্মসমর্পণ করার পরও পুলিশ গুলি করেছে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পুলিশ ট্রেনিং দেওয়া পুলিশ। ‌তাদের অযথা গুলির করার দরকার হয় না। প্রতিটি গুলির হিসাব তাকে দিতে হয়। প্রতিটি মৃত্যুর জবাবদিহি তাকে করতে হয়। পুলিশ অযথা গুলি করেছে, শিশুকে মেরে ফেলেছে। এগুলো সম্পূর্ণই গুজব, অপপ্রচার।

ব্লক রেইড দিয়ে গ্রেপ্তার হচ্ছে, শিশুদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মানবাধিকারের লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিশুদের গ্রেপ্তার করার কথা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বলা হচ্ছে। এ কাজে (সহিংসতা) টাকার বিনিময়ে কিশোর গ্যাংদের কাজে লাগানোর তথ্য আছে। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী পুলিশকে তালিকা করে দিয়েছে, প্রত্যেকটি গ্রেপ্তার ভিডিও ফুটেজ দেখে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৮,২০২৪
জিসিজি/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।