ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আন্দোলনকারী জুলফিকার আহমেদ শাকিল মারা গেছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি পালনকালে গত ৪ আগস্ট মিরপুর ১০ নম্বরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের ছোড়া দুটি গুলি শাকিলের মাথায় বিদ্ধ হয়। এরপর তাকে সেখানে লাঠিসোঁটা ও রড দিয়ে পেটায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা।
আন্দোলনকারী অন্যান্য শিক্ষার্থীরা শাকিলকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে মিরপুরের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, এরপর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। কুর্মিটোলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা শাকিলকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেদিন থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন এই তরুণ।
নিহত শাকিল বাংলাদশে ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ’র চারুকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শাকিল মিরপুরের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিদ্যায়তন আমাদের পাঠশালার সাবেক শিক্ষার্থী এবং ওই বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আমাদের পাঠশালার প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন সাবেক ছাত্র শাকিলের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন। শাকিলের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
শাকিলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তার সাবেক শিক্ষক শিল্পী অমল আকাশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি লেখেন, “বিদায় শাকিল। ‘আমাদের পাঠশালা’ পরিবারের বীর সন্তান তুমি। তুমি আমাদের ছাত্র ছিলে, আজ তোমাকে আমরা বুক টান টান করে স্যালুট জানাই। পরিবর্তনের একটি ধাপ পার করলাম তোমাদের রক্তের বিনিময়ে। সামনের লড়াই আমরা চালিয়ে যাবো তোমাদের সাহসের প্রেরণায়। তোমরা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে গেছো। তোমার জন্য তাই আজ চোখের জল ফেলবো না। চোখের জলে পাথর ঘষে সাহস জাগাতে চাই বাংলাদেশের। আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি, চলবে, যতোদিন না তোমাদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করতে পারছি।
স্যালুট বীর সন্তান, স্যালুট!
আমাদের পাঠশালা পরিবারের হৃদয়ের ভালবাসা নিও। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২৪
এমএমআই/এমজেএফ