ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গণভবন পরিদর্শন শেষে যা বললেন উপদেষ্টারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪
গণভবন পরিদর্শন শেষে যা বললেন উপদেষ্টারা শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গণভবন পরিদর্শন শেষে গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তিন উপদেষ্টা। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবন পরিদর্শন করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে তারা তিনজন গণভবন পরিদর্শনে যান।

প্রায় এক ঘণ্টা পরিদর্শন শেষে গণভবনের গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিন উপদেষ্টা।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমাদের কেবিনেট মিটিং ছিল। সেখানে গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও শেখ হাসিনার শাসনকালে জনগণের ওপর যে অত্যাচার, গুম, খুন, নিপীড়নের স্মৃতি এই সংরক্ষণ করে গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে এবং জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। আজকে আমরা সেই উদ্দেশেই প্রাথমিকভাবে গণভবন পরিদর্শনে এসেছি। গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করতে স্থাপত্যশিল্পী, আর্কিটেক্ট ও বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করব।

গণভবন পরিদর্শনে তিন উপদেষ্টা।  ছবি: জিএম মুজিবুর

তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাকা, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের কেবিনেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে, গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর’- এ রূপান্তর করা হবে। যেহেতু ৫ আগস্ট জনগণ গণভবন জয় করেছে এবং অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের ভেতর দিয়ে আমরা ৫ আগস্টের মুহূর্তটি পেয়েছি। ফলে সেটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং জনগণের বিজয়কে ধারণ করার উদ্দেশে এই গণভবনকে জাদুঘরে পরিণত করা হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীর বুকে আমরা এটিকে একটি নিদর্শন হিসেবে রাখতে চাই। যে যেকোনো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, খুনি রাষ্ট্রনায়কদের আসলে কী পরিণতি হয় এবং জনগণই যে আসল ক্ষমতার মালিক সেই বিষয়টিকে একটি নিদর্শন হিসেবে পুরো পৃথিবীর বুকে রাখার জন্য আমরা এই গণভবনকে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই উদ্দেশে আজকে আমাদের প্রাথমিক পরিদর্শন ছিল।

তিনি আরও বলেন, এখানে যারা দায়িত্বরত আছেন, গণপূর্ত ও স্থাপত্য বিভাগের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের থেকে আমরা প্রাথমিক পরামর্শ নিয়েছি। আমরা আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো বলেছি যে, আমরা কীভাবে এটাকে দেখতে চাই এবং একটি ফরমাল কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হয়ত আগামীকালের মধ্যে কমিটি হয়ে যাবে। কমিটি হলে হয়ত আমরা পরবর্তী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করব। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা যেন এ জাদুঘর উদ্বোধন করতে পারি, সেজন্য খুব দ্রুত গতিতে কাজ সম্পাদন করার জন্য বলা হয়েছে।

কমিটিতে কারা থাকবেন এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, কমিটিতে যারা বিশেষজ্ঞ রযেছেন, স্থাপত্য ও জাদুঘর বিশেষজ্ঞ, আর্টিস্ট, বিদেশে যারা জাদুঘর বিশেষজ্ঞ বা অভ্যুত্থান স্মৃতি ও জাদুঘর করার অভিজ্ঞতা আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

জাদুঘরে কি থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে প্রথমত ৩৬ দিনের অভ্যুত্থানের স্মৃতি, দিনলিপি থাকবে। যারা এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতি থাকবে, তালিকা থাকবে এবং এই আন্দোলন ছাড়াও গত ১৬ বছরে যে নিপীড়ন হয়েছে, যারা গুম হয়েছেন, যাদের বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা থাকবে। এই সকল বিষয়ের একটি রিপ্রেজেন্টেশন থাকবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গণভবন যে ভগ্নাবশেষ অবস্থায় রয়েছে, সেটিকে সর্বোচ্চ সেই অবস্থায় রেখে জাদুঘরটি করা হবে। এখানে কিছু ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশন থাকবে।

পরবর্তী সরকারপ্রধান যিনি হবেন, তার বাসভবন কোথায় হবে জানতে চাইলে এই উপদেষ্টা বলেন, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে। এখন আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যমুনায় থাকবেন।

গণভবন পরিদর্শন করে কী দেখলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন আমরা ভেতরে প্রচুর দেওয়াল লিখন, গ্রাফিতি দেখেছি। লুটপাট হওয়া অনেক আসবাবপত্র আবার মানুষ রেখে গেছেন, সেগুলোও সংরক্ষিত রয়েছে। মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে চারদিকে ভাঙচুর অবস্থা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো এই ক্ষোভগুলোকে যথাসম্ভব ইনটেক রেখেই জাদুঘর করার।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৪
এসসি/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।