পঞ্চগড়: হাজার শহীদের বিনিময়ে নতুন করে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, এই স্বাধীনতায় কেউ থাবা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের উপড়ে ফেলা হবে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের বটতলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে ছাত্র-নাগরিকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ছাত্র-জনতার হাজার প্রাণের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, কোনো কালো শুকুন যদি সেই স্বাধীনতাকে যে কোনো রূপে আকড়ে ধরার বা থাবা দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে এই পঞ্চগড় থেকে শুরু করে পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতাকে একসঙ্গে সেই শুকুনকে ছিঁড়ে উপড়ে ফেলতে হবে।
এই সমন্বয়ক বলেন, আমরা আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটি কথাই বলতে চাই; আজকের পর থেকে কোনো মানুষকে পোশাক দেখে বিচার করা যাবে না। তার কাজ দেখতে হবে। কেউ যদি অন্যায়কারী হয়, চাঁদাবাজ হয়, সিন্ডিকেট লালনকারী হয়, কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহারকারী হয়, সে যে দলেরই হোক না কেন, তাকেসহ তার আশ্রয়দাতা-প্রশ্রয়দাতা সবাইকে আইনের আওতায় এনে ওই কেরানীগঞ্জে (কারাগার) পাঠাতে হবে।
পঞ্চগড়কে সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং এ জনপদে বৈষম্য করা হয়েছে উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, পঞ্চগড় দেশের সব থেকে বেশি দূরত্বের জেলা। কিন্তু এ জেলা থেকে ঢাকা যেতে রেলপথে ট্রনের বগির পরিবর্তে নসিমনের বগি দেওয়া হয়েছে। আমরা বলতে চাই, পঞ্চগড় নিয়ে কোনো বৈষম্য যেন না হয়। তাহলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান; এই চার দেশের যে সীমান্ত—এই চার দেশের যে গলা, এই চার দেশের যে নিশ্বাস এবং এই চার দেশের যে হৃদপিণ্ড—সেই তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা চিরতরে বন্ধ করে দেব।
তিনি বলেন, আমার বাবা-মায়েরা আপনাদের সন্তানকে এখন থেকে শুধু ইঞ্জিনিয়ার বানানোর স্বপ্ন বাদ দেন। একটি জিনিস মনে রাখবেন, আজকের পর থেকে সন্তানকে শুধু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখানোর পরিবর্তে রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে বলুন। একজন যোগ্য, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে বলুন। কারণ দিনশেষে আপনার ভাগ্য নির্ধারণ হয় ওই সংসদের পলিসি থেকে।
টানা এক মাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। এরপর সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকের সঙ্গে মতবিনিময় করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
পঞ্চগড়ের এ মতবিনিময় সভায় সারজিস আলমের পাশাপাশি বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সমন্বয় তারিকুল ইসলাম, রাকিব রানা মাসুদ, জহির রায়হানসহ ঢাকা থেকে আসা ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এতে স্থানীয় সমন্বয়ক ও ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪
এইচএ