ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা তুলে ধরল বাংলাদেশ প্রবাসী ও অভিবাসী পরিষদ, এনআরবি প্রফেশনাল ফর রিফর্ম এবং বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার ঐক্য পরিষদ।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রেমিটেন্স যোদ্ধা ও অভিবাসীদের প্রস্তাবনা পেশ’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় সংগঠন তিনটি এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরে।
আলোচনায় প্রবাসীদের বিভিন্ন দাবিসহ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থা, অর্থনীতি ও দুর্নীতি বন্ধের পাশাপাশি দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়।
গোলটেবিল আলোচনায় আন্দোলনে নিহত শহীদ আব্দুর রহমান জিসানের পিতা প্রবাসী বাবুল সরকার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমার ছেলে জিসানকে গত ২০ জুলাই সন্ধ্যা ৬টায় পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলে। আমি দক্ষিণ সুদানে থাকি। বাংলাদেশে আসার জন্য আমার কাছ থেকে ৮০০ ডলার নিয়েছে। কিন্তু, ভারতে একই ভিসার দাম ৪০০ ডলার। এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
গোলটেবিল আলোচনায় প্রবাসী প্রকৌশলী সালাউদ্দিন বলেন, আমি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দুবাই সরকারের চাকরি করছি। আমরা প্রবাসে থেকে এ আন্দোলনে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি।
আলোচনায় নাগরিক পরিষদের আহবায়ক মো. শামসুদ্দিন বলেন, এটি শুধু ছাত্রদের অভ্যুত্থান নয়, পুরো দেশের মানুষের। আমাদের একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এটি শুভ লক্ষণ। ছাত্রদের জন্য রাজনীতি নয়। যে ছাত্ররা রাজনীতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেন, তাদের পরবর্তীতে রাজনীতিতে নিয়ে আসা দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরে ভারতীয় দালালরা এখনো রয়েছে। তারা দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে। আগে দেশ সংস্কার করতে হবে। পরে নির্বাচন দিলে ভালো হবে। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি। তাই আগে এগুলো সংস্কার করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রবাসী ও অভিবাসী পরিষদের সমন্বয়ক মো. আবু তোয়েব হাবিলদার বলেন, প্রবাসীরা তাদের শ্রমের টাকা দেশে পাঠান। রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখেন। কিন্তু এ প্রবাসীদের নিয়ে দেশের কোনো সরকারেরই মাথাব্যথা ছিল না। বাংলাদেশের মাটিতে এবং বিদেশের মাটিতেও প্রবাসীরা সম্মান পান না। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা যদি রেমিট্যান্স না দিতেন, তাহলে দেশ কখনোই অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে পারত না।
সিন্ডিকেট বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রবাসী ও অভিবাসী পরিষদের এ সমন্বয়ক বলেন, ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যেতে মাত্র ৭০ হাজার টাকা লাগে। পাকিস্তান থেকে যেতে লাগে এক লাখ টাকা। কিন্তু, বাংলাদেশ থেকে যেতে কেন পাঁচ লাখ, সাত লাখ, ১০ লাখ টাকা লাগবে? এর জবাব সরকারকে দিতে হবে। এ ধরনের সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে।
গোলটেবিল আলোচনায় আলোচনায় শ্রমিকনেতা শাহ আলম জানান, বাংলাদেশের শ্রম আইনে প্রবাসী শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আরেক শ্রমিক নেতা মুয়াজ আহমেদ বলেন, প্রবাসে যে শ্রমিকরা মারা যান, তাদের মরদেহ ঠিকমতো দেশে আসছে কি না এবং তাদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে কি না, তা সরকারকে বলতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪
ইএসএস/আরএইচ