জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে বেসরকারি বন্ধন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপারেশনের পর রুমা বেগম (২৭) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ভুলভাবে অপারেশন করায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে জেলা শহরের পূর্ব বাজার এলাকার ওই ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন করে মরদেহ জয়পুরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
মারা যাওয়া রুমা বেগম (২৭) সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের নূরপুর মৃধাপাড়া গ্রামের শামীম হোসেন সাকিবের স্ত্রী। তাকে টনসিলের অপারেশনের জন্য ওই ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়েছিল।
জয়পুরহাট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, মৃতের স্বজনদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাক্তারকে পাইনি। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেছি। মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। পরে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহতের স্বজন, ক্লিনিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর ২টায় রুমা বেগমকে টনসিলের অপারেশনের জন্য ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডা. আসাফউদ্দৌলা ও জয়পুরহাট জেলা হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর হোসেনের তত্ত্বাবধানের রোগীর অপারেশন হয়। অপারেশন শেষে রোগীকে অজ্ঞান অবস্থায় বেডে দেওয়া হয়। বেডে দেওয়ার পরপরই রোগী ছটফট করতে করতে মারা যায়।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে বন্ধন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে ওই ক্লিনিকের ম্যানেজার সজীব বশাক মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি আপস হয়ে গেছে।
নিহত রুমার মা রোসনা বেগম কান্নারত অবস্থায় বলেন, ডাক্তার রংপুরের ছিল। আমার মেয়েকে দেখে বললো অপারেশন করতে হবে। ১২ হাজার টাকা লাগবে। আমরা তাই দিতে চেয়েছি। পরে রাতে অপারেশন রুমে নিয়ে যায়। এক ঘণ্টা পর অজ্ঞান অবস্থায় বেডে দেয়। কিছুক্ষণ পর আমার মেয়ে ধড়ফড় শুরু করলে ক্লিনিকের লোকজন আমাকে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। পরে দেখি আমার মেয়ে আর নাই। আমার মেয়েকে ভুলভাবে অপারেশন করে মেরে ফেলা হয়েছে।
রুমার বড় বোন তহমিনা বেগম বলেন, টনসিলের অপারেশন করার পর বোনকে অজ্ঞান অবস্থায় এনে বেডে রাখে। সেখানে ছটফট করে মারা মারা যায় সে। ভুল অপারেশন করার কারণেই আমার বোন মারা গেছে। অপারেশন করতে পারেনি, ডাক্তার মেরে ফেলেছে।
মোবাইল ফোনে কল করে ওই ক্লিনিকের পরিচালক ডা. আইরিন সুলতানার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমি পরিচালক না তবে সেখানে বসি। এ ব্যাপারে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। এরপর কল কেটে দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৪
আরএ