ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ধরে উম্মুক্ত ময়লা-আবর্জনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৪
নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ধরে উম্মুক্ত ময়লা-আবর্জনা

বরিশাল: আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডাস্টবিন না থাকায় বরিশাল নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, ফুটপাত দখল করে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম পরিচালনা করে বরিশাল সিটি করপোরেশন। বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন অলিগলি থেকে ময়লা আবর্জনা এনে স্তূপ করে রাখা হয় প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর একাংশ ধরে।

এতে পথচারী, এলাকাবাসীসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মানুষ অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন নগর ভবন কর্তৃপক্ষ। যদিও বিগত চার পরিষদ ধরেই আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালুর কথা শোনা গেছে, তবে মাঠপর্যায়ে এ অবধি কোন বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।

নগর ঘুরে দেখা গেছে, নগরের ব্রজমোহন কলেজের সামনে, বগুরা রোড বন বিভাগের পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে, সিএন্ডবি রোড চৌমাথা বাজারের সামনে, পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন বটতলা রোডে, নিউ সার্কুলার রোডের বিপরীত পাশে মেজর এম এ জলিল সড়ক, ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে উন্মুক্তভাবে নগরের বর্জ্য ফেলে রাখা হয়।  আর এসব সড়কে এত ময়লা কেন জানতে চাওয়া হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভ্যান চালকরা জানান, নগরের বিভিন্ন অলিগলি থেকে বর্জ্য এনে এসব জায়গাতে ফেলা হয়, যা পরে ট্রাকে করে নগরের কাউনিয়ার ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শৃঙ্খলা না থাকায় এসব ময়লা দুপুরের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উন্মুক্তভাবে রাস্তার পাশ ধরে পড়ে থাকে। আবার অনেক সময় তো সারাদিনও একই অবস্থা দেখা যায়।

বরিশাল নগরের নাজির মহল্লার বাসিন্দা টিটু বলেন, নগরের নাজিরের পোল থেকে জেলখানা মোড় পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন যানবাহন ছেড়ে যায় বাবুগঞ্জসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়াও এখানে ভ্রাম্যমাণভাবে সবজি, মাছ ও ফল বিক্রি করা হয়। এ কারণে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই ভোগান্তি শুরু হয়। বিভিন্ন অলিগলি থেকে ময়লা আবর্জনা এনে ফেলে রাখা হয় সড়কের উপর। এতে সড়কের তিনভাগের দুই ভাগ ময়লা-আবর্জনায় আটকে যায়। তখন যানবাহন চলাচল করতে যেমন কষ্ট হয়। তেমনি দুর্গন্ধে পথচারী, ভ্রাম্যমাণ দোকানীসহ সকলে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। সড়ক দখল হয়ে পড়ায় যানজট লেগে যায়।

নগরের বটতলা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন বলেন, নিউ সার্কুলার রোডের বিপরীত পাশে মেজর এম এ জলিল সড়কে ময়লা-আবর্জনা তো দিনের বেলাতেও থাকে। এগুলো শুধু দুর্গন্ধই ছড়াচ্ছে না, একই সঙ্গে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে। এভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা উচিত।

নগরের বাংলা বাজার এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, এভাবে সড়কের মধ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে। নিরাপদ ও নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলা উচিত। এজন্য সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।

এ বিষয়ে ক্যাবের বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দত্ত বলেন, আমি জানি বরিশাল নগরে প্রতিদিন ৫ টন ময়লা আবর্জনা তৈরি হয়। এসব ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট একটি স্থানে ফেলে সেখান থেকে ভাগাড়ে নিয়ে ফেলা উচিত। কোনোভাবেই রাস্তার উপর ফেলা যাবে না।  

এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী বলেন, প্রতিদিন নগরী থেকে দুই টন ময়লা আবর্জনা অপসারণ করা হয়। ডাস্টবিন ও সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন না থাকায় ময়লা আবর্জনা রাস্তার উপর ফেলা হয়। রাতের মধ্যে ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হয়।

জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে স্বীকার করে ইউসুফ আলী বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। ডাস্টবিনের জন্য রোববার তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৫ টি ডাস্টবিন না দেয়ায় ভোগান্তি হচ্ছে।

তিনি জানান, বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকেও অবহিত করা হয়েছে। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ডাস্টবিন সরবরাহের জন্য তাগিদ দেয়াড় নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা ডাস্টবিন সরবরাহে ব্যর্থ হলে কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করতে বলেন ইউসুফ আলী।

বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৪
এমএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।