ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৩ সপ্তাহ খাবার পানি নেই শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৪
৩ সপ্তাহ খাবার পানি নেই শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে! শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

সাতক্ষীরা: তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খাবার পানির সরবরাহ নেই সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালে পানি সরবরাহের চারটি মোটর চুরি ও একটি বেসরকারি সংস্থা প্রদত্ত পানির প্লান্ট নষ্ট হওয়াতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে দ্রুত এই সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।

ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগী বলেন, স্যালাইন গুলে খাওয়ার মতো পানিও নেই হাসপাতালে। প্রতিটি কাজের জন্য বাইরে থেকে পানি আনতে হচ্ছে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের দোকান থেকে কিনে, অনেক দূর থেকে হেঁটে ফিল্টার থেকে ও বাসাবাড়ি থেকে বোতলে বা বালতিতে করে পানি নিয়ে আসছেন রোগীর স্বজনরা।

তাদের দাবি, পানি না থাকায় রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগী ও স্বজনদের বিশুদ্ধ খাবার পানির চাহিদা মেটাতে এনজিও'র দেওয়া পানির প্লান্টই ছিল ভরসা। তবে সেটি তিন সপ্তাহ ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। রোগীরা প্রতিদিন পানি আনার কষ্টের কথা বলাবলি করে। কিন্তু কেউ সে কথা গায়ে মাখে না।

উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের গুমানতলী এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সকিনা খাতুন জানান, হাসপাতালে খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই দোকান থেকে পানি কিনে খেতে হচ্ছে।  

নিউমোনিয়া আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকা থেকে এসেছেন মর্জিনা খাতুন। তিনি বলেন, মেয়েকে নিয়ে দুইদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। রাতে খাবার পানির দরকার ছিল। কিন্তু হাসপাতালের ভেতরে খাবার পানির ব্যবস্থা না থাকায় পানি সংগ্রহ করতে পারিনি। পরে পাশের একজনের কাছ থেকে পানি চেয়ে খেয়েছি।  

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতাল ক্যাম্পাসের চারটি পানির মোটর অনেক আগে চুরি হলেও তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই।  

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরের পানির প্লান্টটি নষ্ট হওয়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। তিনি আমাকে বলেছেন উনি ভিজিট করে দেখে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু এখনো করেননি। হয়তো দুই একদিনের মধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এটা দেখা হবে।

এছাড়াও হাসপাতালের মোটরগুলো চুরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জেনেছেন বলে জানান তিনি।

শ্যামনগর সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ লিয়াকত আলী বাবু বলেন, হাসপাতালে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীর স্বজনরা দূরদূরান্ত থেকে পানি এনে পান করছেন। এতে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে দ্রুত পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।