মানিকগঞ্জ: পারিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরাতে দুই ভাই সিংগাপুরে যায়, সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকিয়ায় জড়ান ছোট ভাই। পরকিয়ায় বাঁধা মনে করে, ভাবির সঙ্গে যোগসাজশে আপন বড় ভাইকে খুন।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিন জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদ।
আটককৃতরা হলো, জেলার সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের উত্তর কাংশা এলাকার রোকমান মোল্লার ছোট ছেলে মো. ঝন্টু(২৪), মৃত উজ্জ্বল মিয়ার স্ত্রী কাঞ্চন ওরফে মনিরা(২৩), পাশা বিশ্বাসের ছেলে মাসুদ(২২)।
জানা যায়, জেলার সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের উত্তর কাংশা এলাকার রোকমান মোল্লার দুই ছেলে পারিবারিক স্বচ্ছলতা আনতে প্রবাস জীবন শুরু করে সিংগাপুরে। প্রবাসে থাকা অবস্থায় আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়ার স্ত্রী কাঞ্চন ওরফে মনিরার সঙ্গে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ঝন্টু মিয়া। ঝন্টু দেশে ফিরে আসে এবং পরকিয়ার সম্পর্ক চলমান থাকে। পরে বড় ভাই দেশে আসলে তাদের (মনিরা ও ঝন্টু) অনৈতিক সম্পর্কে বাঁধা সৃষ্টি হয়। এই বাঁধা সরাতে বড় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করে ঝন্টু।
প্রবাস থেকে দেশে ফিরার ৯ দিন পর চলতি বছর (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নিখোঁজ হয় উজ্জ্বল মিয়া। নিখোঁজের ১৮ দিন পর (৩০ অক্টোবর) উপজেলার তালেবপুরের কাংশা ধলেশ্বরী নদীর সংলগ্ন ব্রিজের নিচে কচুরিপানা ভিতর একটি প্লাস্টিকের ড্রাম দেখতে পায় স্থানীয়রা। ওই ড্রামের ভিতর অর্ধগলিত মরদেহটি দেখে এবং জুতা,লুঙ্গি দেখে কাঞ্চন ওরফে মনিরা তার স্বামীকে শনাক্ত করে। পরে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদ বলেন, ভাবির সঙ্গে পরকীয়া জড়ায় দেবর ঝন্টু মিয়া, বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়া দেশে ফিরে আসলে তাদের (মনিরা/ঝন্টু) অনৈতিক সম্পর্কে বাঁধা সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতে মনিরা তার স্বামী উজ্জ্বলকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে এবং অচেতন অবস্থায় উজ্জ্বলকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। এই হত্যার সঙ্গে ঝন্টুকে সহায়তা করে প্রতিবেশী মাসুদ নামের একটি ছেলে। হত্যার পর ঝন্টু ও মাসুদ দুজনে মিলে মরদেহ ড্রামের ভিতর ভরে নদীতে ডুবিয়ে গুম করে। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয় এবং তিন জন আসামিকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা,৭ নভেম্বর ২০২৪.
এমএম