ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে ভোলার নারী উদ্যোক্তারা

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে ভোলার নারী উদ্যোক্তারা

ভোলা: জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভোলার নারী উদ্যোক্তাদের অনলাইন ব্যবসা। নানা সংকট আর প্রতিকূলতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা।

ধীরে ধীরে সেসব নারী হয়ে উঠছেন সফল উদ্যোক্তা। তাদের দেখে অন্য নারীরাও ঝুঁকে পড়ছেন অনলাইন ব্যবসায়। দিন দিন ভোলায় উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়ছে।

তবে পণ্য তৈরির অন্যতম উপকরণ রং, কাপড়, সই-সুতা ও কাঁচামাল সামগ্রীসহ বেশিরভাগ উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন তারা। তবুও জনপ্রিয় এ পেশাকে ধরে রেখেছেন তারা।  

সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ, সহায়তা, ঋণ এবং স্টলসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হলে ভবিষ্যতে এ জেলায় নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে উদ্যোক্তারা। একই সঙ্গে জেলার অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আশা তাদের।

জানা গেছে, ভোলার নারীরা বর্তমানে শাড়ি, পাঞ্জাবি, বেডসিট, থ্রি পিচ, নকশীকাঁথা, ওয়ালমেট, কেক, রকমারি রান্নার আইটেম, আচার, হাতের তৈরি মসলা ও অর্গানিক প্রোডাক্ট তৈরি করেন। এসব পণ্যের দাম বর্তমান বাজারে গড়ে দুই থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পণ্যের এমন ঊর্ধ্বগতির ফলে সীমিত লাভ করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।  

ভোলা সদরের নারী উদ্যোক্তা ফারজানা হাসি বলেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে নকশি কাঁথা তৈরি করে অনলাইন এবং সরাসরি বিক্রি করছি। নানা প্রতিকূলতার পরেও উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং নিজের ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চেষ্টা করেছি। তবে বর্তমান বাজার দর কিছুটা মন্দা যাচ্ছে উদ্যোক্তাদের। এর অন্যতম কারণ উপকরণের দাম বৃদ্ধি।  

শুধু হাসি নন, তাদের মত অনেকের অবস্থা যেন একই রকম। দাম বৃদ্ধির ফলে কমবেশি ক্ষতির মুখে তারা। উপকরণের দাম বাড়লেও পণ্যের দাম বাড়াতে ক্রেতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইশরাত জাহান সুমাইয়া বলেন, অনলাইনে অর্গানিক হেয়ার অয়েল বিক্রি করেন তিনি। এজন্য তেল ও পেঁয়াজসহ বিভিন্ন কাঁচামাল কিনতে হয়। বাজারে এখন এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। তাই সীমিত লাভও করতে পারছি না আমরা। কারণ, আমাদের পণ্যে দাম বাড়ালে তো কাস্টমার নিতে চায় না।

ভোলা সদরের মুছাকান্দি গ্রামের নারী উদ্যোক্তা এবং ভোলা জেলা নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রমিতা এনি বলেন, আমাদের সব নারী উদ্যোক্তা অত্যন্ত পরিশ্রমী। সংসার সামলানোর পাশাপাশি তারা হাতের তৈরি হ্যান্ড পেইন্টিং, নকশি কাঁথা ও কেক তৈরিসহ নানা পণ্য অনলাইন এবং অফলাইনে বিক্রি করেন। আগের চেয়ে উদ্যোক্তা সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি সুযোগ সুবিধা। উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে আরও বেশি উৎসাহ পাবেন নারী উদ্যোক্তারা।  

তিনি আরও বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং জরুরি। এতে উৎপাদন খরচ কমবে উদ্যোক্তাদের। ফলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তারা।  

এদিকে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সরকারি সহায়তা এবং প্রণোদনা দাবি নারী উদ্যোক্তাদের।

এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। কোনো ব্যবসায়ী যদি নির্ধারিত দামের বাইরে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রির চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোলা বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক এসএম সোহাগ হোসেন বলেন, আমরা নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারীদের ঋণ, প্রশিক্ষণ এবং প্লাট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কারো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তাদের পাশে আমরা আছি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।