ঢাকা: বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সরকারের আদর্শ এবং উন্নয়ন তৎপরতা প্রচারের জন্যেও টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুসন্ধানী সাংবাদিক সম্মেলন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব ‘নতুন বাংলাদেশ: কেমন গণমাধ্যম চাই’ বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
কামাল আহমেদ বলেন, আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, অসংখ্য সংবাদ মাধ্যম এখানে আছে। গণমাধ্যম বললে, আরও অনেক বড় করে বলতে হবে, অনেক গণমাধ্যমে আছে, টেলিভিশন, রেডিও, অনলাইন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম আছে। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মেও অনেকে অনেকভাবে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, এক ধরনের তথ্যের বন্যার মতো পরিস্থিতি চলছে। সেই ইনফরমেশন ফ্লাডের মধ্যে ডিস ইনফরমেশন, মিস ইনফরমেশন আবার কারেক্ট ইনফরমেশনও আছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে বড় ধরনের একটা কৌশল ছিল, যে সংবাদ মাধ্যমগুলো বস্তুনিষ্ঠভাবে সংবাদ করবে, তাদের তথ্য যেটা প্রকাশ করতে চায়, সেটা হারিয়ে যাক, অন্য আরও অজস্র প্রচার মাধ্যমের প্রচারের মাধ্যমে। সেই কারণে তারা (বিগত সরকার) গড়ে সাংবাদিকতার সক্ষমতা, আর্থিক সক্ষমতা এবং বাজারের আকার কোনো কিছু বিবেচনায় না নিয়েই অনুমতি দিয়েছে টেলিভিশন চ্যানেল খোলার এবং পত্রিকা প্রকাশের।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ৪৬টি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিস্ময়কর হলো, এমন আবেদনপত্র আমি দেখেছি, যে টেলিভিশন চ্যানেল এখনও অপারেশনে আছে, সেই টেলিভিশন চ্যানেল তার আবেদনপত্রেই লিখেছিল, আমি আওয়ামী লীগের কর্মী, আওয়ামী লীগ করেছি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আদর্শ এবং উন্নয়ন তৎপরতা প্রচারের জন্যে টেলিভিশন তৈরি করতে চাই, আমাকে টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হোক। এছাড়া কোনো যোগ্যতার কথা ওই আবেদনে নেই। ওই আবেদনে কোনো মিশন স্টেটম্যান্ট নাই। সেই টেলিভিশন চ্যানেল এখনও সম্প্রচারে আছে। এ টেলিভিশনকে কি আপনি গণমাধ্যম বলবেন।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের পাবলিক ইন্টারেস্ট থাকা দরকার। গণমাধ্যমে জনস্বার্থ প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, জনস্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কি না, জনগণের পক্ষে কাজ হচ্ছে কি না, সেই টেস্ট যদি আমরা না রাখি, তাহলে সেটাকে কি আমরা টেলিভিশন বা পত্রিকা যাই হোক না কেন, আমরা তাকে কি গণমাধ্যম বলবো। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর আসা দরকার, আলোচনা হওয়া দরকার।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরও আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম, পিআইবি মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৪
আরকেআর/আরআইএস