ফরিদপুর: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামে তিন সহোদরের বসতঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে আলফাডাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খবিবুর রহমান মিয়া।
এর আগে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতির ঘটনার পর থেকে ওই এলাকার মানুষদের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ১০-১২ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খবিবুর রহমানের বাড়ির গ্রিলের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় খবিবুর রহমানকে হাত-পা বেঁধে ফেলে। তার স্ত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও চার ভরি স্বর্ণালংকারসহ একটি মোবাইলফোন নিয়ে নেয়। এরপর মেজ ভাই খায়ের মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে ৫৫ হাজার টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয়। ডাকাতেরা খায়ের মিয়ার ছেলে সবুজ মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে দুই লাখ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয়। সবশেষে বড় ভাই মৃত টুকু মিয়া ছেলে শাহ্ আলমের ঘরে প্রবেশ করে দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সে সময় ডাকাতরা প্রত্যেকটি ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। বাড়িতে থাকা সব পুরুষকে বেঁধে ফেলে ও নারীদের জিম্মি করে মোবাইলফোন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ডাকাতরা তাণ্ডব চালিয়ে স্থান ত্যাগ করে। তিন সহোদরের বাড়ি থেকে নগদ প্রায় সোয়া চার লাখ টাকা ও সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়।
ক্ষতিগ্রস্ত খবিবুর রহমান বলেন, গতকাল আলফাডাঙ্গা সোনালী ব্যাংক থেকে এক লাখ টাকা উত্তোলন করে বাসায় রাখি। এছাড়া ভাতিজার জমি বিক্রির টাকা ছিল বাড়িতে। ডাকাতরা আমাকে হাত-পা বেঁধে বলে যে গতকাল ব্যাংক থেকে যে টাকা উঠিয়েছিস সেগুলো বের কর। রাতের অন্ধকারে তাদের কাউকে আমরা চিনতে পারেনি। তবে হাবভাবে মনে হয়েছে খুব পরিচিত লোকজন। ডাকাতরা স্থান ত্যাগ করার পর বাড়ির লোকজন চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যায়।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল বলেন, বিদ্যাধর গ্রামের মিয়া বাড়িতে এই প্রথম এমন ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এরা তিন ভাই গ্রামের উচ্চ শিক্ষিত ও ভদ্র পরিবার বলে একটি সুনাম রয়েছে। এ ঘটনার পর আমাদের এলাকার লোকজনের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ থাকবে, সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ডাকাতদের চিহ্নিত করে মালামাল উদ্ধার করার পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-অর-রশিদ জানান, রাতে ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ডাকাতদের শনাক্তসহ লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৪
এসআরএস