ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

পদ না পেয়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, ককটেল বিস্ফোরণ

  ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
পদ না পেয়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, ককটেল বিস্ফোরণ ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের সড়ক অবরোধ

ঢাকা: ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা নিয়ে অসন্তোষে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। কলেজের সামনের সড়কে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।

বৃহস্পতিবারও পদবঞ্চিতদের কর্মসূচি রয়েছে।  

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কলেজের প্রধান ফটকে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন পদবঞ্চিতরা। দিনভর একমুখী সড়কে যানচলাচল বন্ধ হওয়ায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।  

এর আগে দুপুরে মিরপুর সড়ক অবরোধ করে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসিরের কুশপুতুল পোড়ান।

পরে সন্ধ্যায় নিউমার্কেট থানার ওসি মোহসেন উদ্দীন বলেন, তারা চলে যান, পরে আবার সড়কে আসেন। তারা সড়কে আসার পর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এভাবেই চলছে। এরফলে যানজট তৈরি হয়েছে। আমরা সতর্ক আছি, আমাদের পুলিশ সেখানে আছে।

আগের দিন মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার মধ্যে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঢাকা কলেজের প্রধান ফটক, মিরপুর রোডের একাধিক স্থানে এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে পদধারী-পদবঞ্চিত কেউই ককটেল বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেননি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের পর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে দুটি, নায়েমের গলি ও মিরপুর রোডে চারটি এবং ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থিত ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে কেউ হতাহত না হলেও লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ঢাকা কলেজ শাখার ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। কমিটিতে কলেজের বাংলা বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পিয়াল হাসানকে আহ্বায়ক এবং ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মিল্লাদ হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের  নির্দেশ রয়েছে।  

নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পরই বিক্ষোভ শুরু হয়। কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক বলেন, ত্যাগী-বঞ্চিতদের কমিটিতে রাখা হয়নি। ৫ আগস্টের পরে সুবিধাভোগীরা এতে স্থান পেয়েছে। তাই বিক্ষোভ হয়েছে।

সড়ক অবরোধে টায়ার প্রজ্বলনের কারণে জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা পাঁচ মিনিটের জন্য জ্বালাচ্ছি, এতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের তো কেন্দ্রে বিষয়টা জানান দিতে হবে। আর অন্যপাশে খোলা রেখেছি। তবে কালকে আমরা এটি খেয়াল রাখব যেন দুর্ভোগ না হয়।

তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়, তাদের ধাওয়া দিয়েও ধরতে পারিনি।

পিয়াল হাসান ও মিল্লাদ হাসান বলেন, দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে দলের ত্যাগী নেতাদের পদায়ন করা হবে। আমরা কোনোভাবেই জনদুর্ভোগ করার পক্ষে নই। আমরা মীমাংসার চেষ্টা করছি।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, সাংগঠনিক কাঠামোর কারণে আমরা সবাইকে প্রত্যাশিত পদে দিতে পারছি না। কিন্তু যারা প্রত্যাশিত পদ পাননি তারা যোগ্য নন, এমনটি নয়। পদবঞ্চিত হলে বা যথাযথ মূল্যায়ন না হলে সাংগঠনিক কাঠামো আছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা যাবে না।

তিনি বলেন, যে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে, তা মাত্র ৪৫ দিনের জন্য সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। এই কমিটির দায়িত্ব মূলত ৪৫ দিনের মধ্যে বর্তমান শিক্ষার্থীদের হাতে নেতৃত্ব হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আকার সেশন অনুযায়ী সমন্বয় করেই দ্রুত বাড়ানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
এফএইচ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।