ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় বোরো ধান রোপণের ধুম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫
বগুড়ায় বোরো ধান রোপণের ধুম বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন কৃষকরা

বগুড়া জেলাজুড়ে বোরো ধানের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। জমি তৈরি ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

যেসব জমিতে আমন ও আগাম আলু চাষ হয়েছিল, সেগুলোতে বোরো চাষ শুরু হয়েছে। ভালো ফলনের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪৭৪ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত রোপণ হয়েছে ১০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছর ১ লাখ ৮৭ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩২ মেট্রিক টন। জেলায় এবার আটাশ, উনত্রিশ, ব্রি-৮১, ব্রি-৮৮, ব্রি-৮৯, ব্রি-১০০, কাটারিভোগ, কাজললতা, শুভলতা, জিরাশাইল ও হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ করছেন কৃষক।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জানুয়ারি থেকে স্বল্প পরিসরে বোরো চাষ শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে পুরোদমে চলবে বোরো চাষ। আগামী মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত চারা রোপণ চলবে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে।

বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, শিবগঞ্জ, শেরপুর, নন্দীগ্রাম, শাজাহানপুর, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া ও কাহালু উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বোরো আবাদ হয়ে থাকে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ইতোমধ্যে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। কৃষকেরা একে অপরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাদের জমিতে বোরো চাষাবাদ শুরু করেছেন। তারা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর আবাদে খচর বেশি হচ্ছে। সবকিছুর দাম বেশি। শ্রমিক খরচসহ অন্যান্য জিসিনপত্রের দামও বেশি।

শীতকে উপেক্ষা করে বোরো ধানের চারা রোপণে কাজ করছেন কৃষি শ্রমিকেরা। এর মধ্যে অনেক এলাকায় নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণও চোখে পড়ার মতো। জমি তৈরি থেকে শুরু করে চারা ওঠানোর কাজেও নারীদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

শাজাহানপুর উপজেলার জামাদারপুকুর এলাকার কৃষক নাজেম উদ্দিন জানান, এ বছর ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। জমি প্রস্তুত করে বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু করেছেন।

তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে খরচ বেশি। সেই সাথে শ্রমিকের মজুরি বেড়ে গেছে। ফলে চারা রোপণে খরচ বেশি হচ্ছে। আশা করছি, এবার ফলন ভালো হবে, দামও ভালো পাব।

অন্যান্য উপজেলার কৃষকরা জানান, বিগত বছরের মতো এবারও বোরো ধানের ভরা মৌসুমে সার ও সেচকাজের জন্য সঠিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে ইরি-বোরোতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সার, তেল এবং বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় চিন্তিত কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান ফরিদ জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪৭৪ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত রোপণ হয়েছে ১০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত রোপণ চলবে। আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। এ ছাড়া ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।