ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বোমাবাজি বন্ধে যা দরকার করা হবে

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫
বোমাবাজি বন্ধে যা দরকার করা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: মানুষের সম্পদ রক্ষা ও জীবনের নিরাপত্তা দিতে যা যা করণীয় সরকার তার সবই করবে বলে বিএনপির প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই সঙ্গে যারা হরতাল-অবরোধ দিয়ে সন্ত্রাস ও বোমাবাজি করছে তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।



খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করেন নি এটা আপনার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। যে কোনো একজন রাজনৈতিক নেতা যদি কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, সে ভুলের খেসারত তার নিজেকেই দিতে হয়, তার দলকে দিতে হয়। আপনি ভুল করেছেন তার খেসারত দেবেন আপনি, আপনার দল। বাংলার মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন না। বাংলার মানুষকে কেন হত্যা করবেন? তাদের ওপর কেন জুলুম করবেন?
 
সোমবার (১২ জানুয়ারি) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও মান রক্ষার জন্য, তাদের সম্পদ রক্ষার জন্য, তাদের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যা যা করণীয় আমরা তাই করবো। এখানে কেউ কোনো বাধা দিতে পারবে না। ধৈর্যের একটা সীমা থাকে।
 
হরতাল-অবরোধের নামে বোমাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায়, কোথায় কোথায় সন্ত্রাসী আছে, কারা বোমা বানায় আর কারা বোমা মারে তাদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। তাদের বিচার হবে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেবো।
 
খালেদা জিয়ার ডাকে মানুষ সাড়া দেবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, উনি ঘরে ফিরবেন না। উনি আন্দোলন করে এ সরকারকে উৎখাত করবেন। ওনার ডাকে মানুষ সাড়া দেয় না। খালেদা জিয়া সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি রানী। তার কথায় জনগণ আসবে না।
 
খালেদা জিয়া কোন স্বপ্নে বিভোর? এমন প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের ওপর বোমা, পেট্রোল বোমা এগুলো করে যাচ্ছেন। উনি লাশ ফেলবেন। দেশের মানুষ যখন শান্তিতে আছে, স্বস্তিতে আছে তখন অশান্তি বেগম (খালেদা জিয়া) তার মনের অশান্তি দিয়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে এটা আমরা বরদাস্ত করবো না।
 
বিএনপির বিগত নির্বাচনে অংশ না নেয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন বিএনপি নেত্রী গো ধরে বসেছেন তিনি নির্বাচনে আসবেন না। যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে জামায়াত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে পারেনি। তাই তারা নির্বাচনে আসতে পারবে না। জামায়াত নির্বাচনে আসতে পারবে না বলে, নির্বাচনে আসলে ভরাডুবি হবে জেনে বিএনপি নির্বাচনে আসেনি।
  
তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা খালেদা জিয়াকে মুক্ত এলাকায় নিয়ে যেতে গেরিলা পাঠিয়েছিলেন। খালেদ মোশাররফ, মঞ্জু, হায়দার তাদের ওয়াইফরা চলে গেলেও তিনি যান নি। তিনি পরের দিন যাবেন বলে জানান। কিন্তু পরের দিন তিনি আসলাম বেগ (পরে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হয়েছিলেন) তত্ত্বাবধায়নে তিনি ক্যান্টনমেন্টে চলে গেলেন।  
 
খালেদা জিয়া একটা ষড়যন্ত্র পাকিয়েই আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘৮৬ সালেও আমরা এক সঙ্গে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু তখনো হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে গেলেন। পরে আর তিনি নির্বাচন আসলেন না।
 
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কোন দিন এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি। তারা সব সময় পরাজিত শক্তির পদলেহী।
 
সরকার সফলতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আজ ১২ জানুয়ারি। আমরা এক বছর সফলতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা সরকার গঠন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি, তাদের রায় কার্যকর করেছি। বিশাল সমুদ্র জয় করেছি, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রেখেছি। মূল্যস্ফীতি কমিয়েছি। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলা করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী। ওয়াদা করেছিলাম নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করবো। আমরা নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি।
 
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বৈধতা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সংসদের স্পিকার সিপিএ চেয়ারপারসন ও এ সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী আইপিইউ’র সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বৈধ না হলে সারা বিশ্ব আইপিইউ ও সিপিএ তে বাংলাদেশের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতো না। সারা বিশ্ব কিছুই বোঝে না, বোঝেন শুধু তিনি (খালেদা জিয়া) আর তার কুলাঙ্গার পুত্র।
 
দেশের জনগণ ক্ষেপলে পরিণতি খুব খারাপ হবে বিএনপির প্রতি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামায়াত আজ যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচার হচ্ছে। আর উনি জামায়াতকে বাঁচানোর জন্য জামায়াতের হাত ধরে বাংলাদেশের মানুষ খুন করবেন আর আমরা বসে বসে দেখবো, এটা কখনো হবে না। জনগণের ওপর জুলুম অত্যাচার বন্ধ করেন। দেশের জনগণ ক্ষেপে গেলে এর পরিণতি খুবই খারাপ হবে। দেশের মানুষ শান্তি চায়, নিরাপদে চলতে চায়।
 
উনি যাদের প্রভু মনে করেন। তাদের পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলবে, ওই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস হবে এটা আমরা কখনো বরদাস্ত করবো না। যোগ করেন তিনি।
সভায় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে দলের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫

** বোমাবাজদের পুলিশে সোপর্দের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
** ‘অফিসে থাকা ওনার পুরনো অভ্যাস’
** নির্বাচনে না আসতে গোঁ ধরেছিলেন খালেদা
** সফলতায় এক বছর পূর্ণ
** বাংলাদেশের ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিলো
** যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে বঙ্গবন্ধুই গড়ে তুলেছিলেন
** মঞ্চে শেখ হাসিনা
** আ’লীগ কর্মীদের সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার আহ্বান আশরাফের
** খালেদা-তারেকের বিচার দাবি শেখ সেলিমের
** ফজলে নূর তাপসের মিছিলে ককটেল
** খালেদার গ্রেফতার দাবি করলেন ত্রাণমন্ত্রী
** খালেদাকে ভূতে আছর করেছে

** আ’লীগের সমাবেশস্থল থেকে অস্ত্র ও পেট্রোল বোমাসহ আটক ৩

** আ’লীগের সমাবেশ শুরু

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।