ঢাকা: গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আড়াই হাজার মুক্তিযোদ্ধার প্রকাশিত তালিকা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১৯ জানুয়ারি) বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে এ বিষয়ে নেওয়া সরকারি সিদ্ধান্তকে কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদেরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. জাহিদুল বারি ও অ্যাডভোকেট তবারক হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. খোরশেদ আলম শুনানি করেন।
২০১৩ সালের ১২ জুলাই গেরিলা বাহিনীর দুই হাজার ৩৬৭ জন সদস্যের নাম অন্তর্ভূক্ত করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।
কিন্তু ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ওই নাম সম্বলিত গেজেট বাতিল করে সরকার।
সরকারের তালিকা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন ওই গেরিলা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ও ইউনাইটেড ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ঐক্য ন্যাপ) সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য।
রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার পরপরই ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ও সদস্যরা একটি বিশেষ গেরিলা বাহিনী গঠন করে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি গেরিলা বাহিনীর কমান্ডাররা ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকার এবং স্বাধীনতা উত্তর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকারসহ প্রতিটি সরকার এ বিশেষ গেরিলা বাহিনীকে মুক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী অন্যতম মুক্তিবাহিনী হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন।
সরকারি গেজেটে এ বাহিনীর সদস্যদের নাম সম্বলিত তালিকা প্রকাশিত হতে থাকে। কিন্তু কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই সরকার ওই নাম সম্বলিত গেজেট বাতিল করে। এটা বেআইনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫