ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শনিবার পাটগাতী সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫
শনিবার পাটগাতী সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গোপালগঞ্জ: বহু প্রতীক্ষিত গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত পাটগাতী সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
 
শনিবার বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন।


 
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে উদ্বোধনের যাবতীয় প্রস্তুতি চলছে। এখানে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখা যাবে।  

এরপর সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হবে। সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে পিরোজপুর, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরগুনা ও গোপালগঞ্জ জেলার মানুষের আর্থ-সামাজিক-উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হবে।

এ সেতুর উদ্বোধনের ফলে মধুমতি নদীর দু’পাড়ের মানুষের মধ্যে সেতু বন্ধন রচিত হবে। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৭২.৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৯১.৪৯১ মিটার দীর্ঘ ও ৯.৫০ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

বিগত ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মধুমতি নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ২০০০ সালের ২৩ ডিসেম্বর এই সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় দফায় আবারো ক্ষমতায় এলে ২০০৯ সালে সেতুটির অসমাপ্ত নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালের ৫ মে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ না হওয়ায় একের পর এক সময় বাড়ানো হয়। এতে এলাকার মানুষ প্রায় আশাহত হয়ে পড়েছিল। অবশেষে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেতুর কাজ সমাপ্ত হয়। নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সেতুটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে ১৫ বছর। তারপরও এলাকাবাসী খুশি। অবশেষে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে।

টুঙ্গীপাড়া উপজেলার বালাডাঙ্গা গ্রামের বৈশাখী বিশ্বাস (২২) বলেন, এখানে আগে খেয়া (নৌকা) দিয়ে পারাপার হতে হতো। অনেক সময় খেয়া পাওয়া যেত না। তখন মানুষের ভীষণ ভোগান্তি হতো। ব্রিজটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলে মানুষের অনেক উপকার হবে। খেয়ার জন্য আর অপেক্ষা করতে হবে না। খেয়াঘাটের ভোগান্তি কমবে। এতে মানুষের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

টুঙ্গীপাড়া উপজেলার পাটগাতীর শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী পলি শেখ ও কাকলী শেখ বলেন, সেতুটি উদ্বোধন হওয়ার পর ওপারের মানুষ খুব সহজে ও অল্প সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে টুঙ্গীপাড়া ও গোপালগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শিবগাতি গ্রামের কলেজ ছাত্রী ইতি শেখ, হাসি মজুমদার, ব্যবসায়ী জুয়েল কাজী,  টুটুল গাজী বলেন, সেতুটি এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরাবে। ব্যবসা বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ হবে।

টুঙ্গীপাড়ার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক পান্না বলেন, সেতুটি নির্মাণ করে আওয়ামী লীগ এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি পূরণ করেছে। এ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ সবজি উৎপাদন হয়। সেতুটির কারণে এসব সবজি সরাসরি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে চলে যাবে। এতে কৃষক উপকৃত হবে। তাদের উৎপাদিত সবজি আর নষ্ট হবে না।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরন রায় বলেন, সেতুটি নির্মাণের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটলো। এই পাটগাতী সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে পিরোজপুর, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরগুনা ও গোপালগঞ্জ জেলার জনসাধারণের আর্থ সামাজিক-উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।