খাগড়াছড়ি: মারমা জনগোষ্ঠীর নানান ধরনের পিঠার মধ্যে ‘ছেছমা’ পিঠা সবচেয়ে জনপ্রিয়। এটা মূলত মারমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পিঠা হলেও ইদানিং ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার কাছেই পিঠাটির রয়েছে আলাদা চাহিদা।
কেবল ‘ছেছমা’ নয়, স্বাদে-গন্ধে ও দেখতে অতুলনীয় নানান পাহাড়ি পিঠা কদর দিনদিন বাড়ছে।
খাগড়াছড়িতে স্থানীয়ভাবে ‘ছেছমা পিঠা’ বান্দরবানের মারমাদের কাছে ‘ছাইস্ববক্ মু’ নামে বিশেষ পরিচিত। নাম তার যে যাই বলুক, এ পিঠার চাহিদা ও জনপ্রিয়তা সর্বজন বিদিত। অনুষ্ঠান আয়োজন হলেই আপ্যায়নের মেন্যুতে ছেছমা পিঠার নাম আসে আগে।
এ পিঠা খেতে মরিয়া থাকেন সব ধরনের পিঠা পেটুক ও বিলাসীরা। মারমাদের আরো নানান পিঠা রয়েছে। এসব পিঠার নামকরণ বা ইতিহাস নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা না থাকলেও এটুকু বলা যায়, পিঠার বস্তু বা উপকরণের ভিত্তিতেও অনেকগুলো পিঠার নাম হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে নির্ধারিত কোনো দোকানে মারমা পিঠা বিক্রি না হলেও বিশেষ করে শীতের মৌসুমে রাস্তার ধারে, পাড়া গাঁয়ে মারমাদের বিচিত্র পিঠা দেখা যায়। মারমা নারী-কিশোরীরা খুবই কম মূল্যে পিঠা বিক্রি করে থাকেন। শীত এলে অনেকে খুশি হন, বাড়তি আয় রোজগারের আশায়। সুস্বাদু এ পিঠা পর্যটকদের কাছে ইদানিং বেশ জনপ্রিয়।
পিঠা বিক্রেতা চাছিং মং মারমা, আপ্রুশি মারমা বাংলানিউজকে জানান, বিশেষ করে শীতকালে আমরা এ পিঠা তৈরি করে থাকি। প্রতিদিন ৮ থেকে ৯শ টাকার পিঠা বিক্রি করি। এতেই সংসার চলে যায়।
মারমা গবেষক ও মুক্তিযোদ্ধা মংসাথোয়াই চৌধুরী বলেন, বিন্নি চাল, গুড় আর নারকেল দিয়ে তৈরি এ পিঠা অনেক সুস্বাদু। দেখতে অনেকটা পাটিসাপটা পিঠার মতো। খেতে অনেক মজা। তাই এটি সবার কাছে জনপ্রিয়।
এছাড়াও মারমারা আরো অনেক পিঠাই তৈরি করেন। যেমন ছেছমা, কদা মু, কেইন্দা মু, রেপ্রিমু, ছিলামু, ফাকামু, গুংমু।
আপনিও বেড়াতে গেলে মারমা জনগোষ্ঠী নিশ্চয়ই আপ্যায়ন করাবেন ছেছমা, কদা মু, কেইন্দা মু, রেপ্রিমু, ছিলামু, ফাকামু, গুংমু প্রভৃতি পিঠা দিয়ে। মারমাদের ঐহিত্যবাহী আরো নানা পিঠা-পায়েস প্রচলিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫