ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নারায়ণগঞ্জে নাশকতাকারীরা শনাক্ত, গ্রেপ্তারে অভিযান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫
নারায়ণগঞ্জে নাশকতাকারীরা শনাক্ত, গ্রেপ্তারে অভিযান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অবরোধে যানবাহনে আগুন দেওয়াসহ নাশকতাকার সাথে জড়িত অনেককেই শনাক্ত করা গেছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে।



পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, নাশকতাকারীদের বেশিরভাগই বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মী। এছাড়াও শিবিরের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটও এসব নাশকতায় জড়িত। নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারীদের অনেকেই পর্দার আড়ালে থেকে কর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) শহরের চারারগোপ এলাকায় বন্ধু পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার সময় শফিকুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়েছে শামীম নামে আরও এক নাশকতাকারীকে।

সূত্রটি জানায়, পুলিশের ভয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে গেলেও তাদের নির্দেশে কর্মীরা বাসে আগুন দিচ্ছে। নাশকতায় দলটির নিচের সারির কর্মীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। আটককৃত শফিকুল ও শামীম দুই জনই দলটির নিচের সারির কর্মী। তারা বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্ট ও মোটরসাইকেল গ্যারেজে কাজ করেন। নিম্ন আয়ের এসব যুবকদের দিয়েই নানা ধরনের নাশকতা ঘটানো হচ্ছে। অনেক সময়ে এসব কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে মোটরসাইকেল। যানবাহনে আগুন দেওয়ার পর নাশকতাকারীরা দ্রুত মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের বাংলানিউজকে জানান, নাশকতাকারীদের অনেককে শনাক্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গত বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে ফতুল্লার ভোলাইলে ট্রাক ও প্রাইভেটকারে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এর আগে সোমবার (১৯ জানুয়ারি) সকালেও ফতুল্লার মাসদাইরে বাস ও ট্রাকে আগুন দেয় তারা।

৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সিদ্ধিরগঞ্জ শিমরাইল মোড় এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করে অবরোধ সমর্থকরা। ৭ জানুয়ারি রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালিরবাজারে নারায়ণগঞ্জ-চিটাগাংরোডে চলাচলকারী বন্ধু পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। অবরোধের তৃতীয় দিন ৮ জানুয়ারি সকাল ৮টায় মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা সড়কের গোগনগর পুরাতন ব্রিজ এলাকায় ৮ থেকে ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

অবরোধের চতুর্থ দিনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে রুটে চলাচলকারী বন্ধন পরিবহনে আগুন দেয়া হয়। ওইদিন শুক্রবার রাত ৮টায় শহরের চাষাঢ়া মডার্ন ডায়গনস্টিক সেন্টারের সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কে ঢাকামুখী বন্ধন পরিবহনের একটি বাসে (চট্র মেট্রো ব ১১-০০০৯) আগুন দেয় অবরোধ সমর্থকরা। এ সময় বাসের চালকসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়।

অবরোধের ৬ষ্ঠ দিনে রোববার (১১ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টায় শহরের চারারগোপ এলাকাতে সিরাজউদ্দৌলা সড়কে উৎসব পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব ১৪-০৪২০) একটি বাস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বোরাক পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো জ- ১১-১৯৮৯) আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। অবরোধের ৭ম দিনে (১২ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে শহরের উকিলপাড়া এলাকাতে উৎসব পরিবহনের দু’টি যাত্রীবাহী বাস(ঢাকা মেট্রো ব-১১-১৫৮৫) ও (ঢাকা মেট্রো ব ১৪-০৪২০) এবং একটি কাভার্ডভ্যানের (ঢাকা মেট্রো ড-১১-১৯২৮) গতিরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেয় অবরোধকারীরা।

এছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জে অবরোধ সর্মথকরা ৫ থেকে ৬ গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। রূপগঞ্জে একটি লেগুনায় অগ্নিসংযোগসহ ৬ থেকে ৭টি গাড়ি ভাঙচুর করে। অবরোধের ৮ম দিনে (১৩ জানুয়ারি) রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট কলামিস্ট আব্দুল আলীমের মালিকানাধীন রাহাতুল কার্গো সার্ভিসের একটি কাভার্ডভ্যানে (ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-২৯২৯) আগুন দেয় অবরোধকারীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।