ঢাকা: গণতান্ত্রিক দেশে অনির্বাচিত সরকারের দেশ শাসন করার সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, সাংবিধানিক গণতন্ত্র শুধুমাত্র সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মাঝেই অবস্থান করতে পারে।
শনিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের মিলনায়তনে ড. মশিউর রহমানের ‘Constitutional Democracy- not Death Squads again’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন। বইটির প্রকাশক মাওলা ব্রাদার্স।
প্রকাশনা উৎসবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই-কমিশনার পঙ্কজ শরণ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর হারুন-উর রশিদ, জাতীয় যাদুঘরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, বিটিভি’র মহাপরিচালক আসাদ মান্নান, ড. রওনক জাহান, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হক, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম, ড. মিজানুর রহমান শেলী প্রমুখ।
স্পিকার আরও বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় সংবিধানই হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল চাবিকাঠি। তাই রাষ্ট্রের যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হলে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমেই করতে হবে।
শিরীন শারমিন বলেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে কেবলমাত্র গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে। বইয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, বইটিতে লেখক ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এবং সমসাময়িক সাংবিধানিক আইন ও গণতন্ত্র নিয়ে আলোকপাত করেছেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অনির্বাচিত কোনো সরকারের দেশ শাসন করার সুযোগ নেই- সে বিষয়টিতে বইতে উঠে এসেছে। ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম, সহিংসতা বেড়ে যাচ্ছে- তা চিত্রায়িত হয়েছে বইয়ে।
এ বি এম খায়রুল হক বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা হওয়া উচিত। দু:খজনক হলেও সত্য, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে অনুপস্থিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে ‘অ্যাডহক’ ও অনির্বাচিত সরকার আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, যদি আপনাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) কোনো সন্দেহ সংশয় থাকে, তাহলে আপনাদেরকে সংবিধানের মধ্যে থেকেই সমাধান করতে হবে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে নয়।
ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম সন্ত্রাস দমন আইন সর্বজন স্বীকৃত হলেও তার যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না উল্লেখ করে বলেন, এ আইন কেন প্রয়োগ হচ্ছে না তা আমার প্রশ্ন। আমরা আইন দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ আইন প্রয়োগের যথাযথ পরামর্শ দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে স্বচ্ছ ও নির্ভুল ভোটার তালিকা রয়েছে। এখন দরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতার সমাধান করা উচিত।
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় নয়। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রত্যাবর্তন করা সম্ভব নয়।
হারুন উর রশিদ বলেন, মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য না থাকলে গণতন্ত্র কাজ করে না। গণতন্ত্রের মূল্যবোধে যারা বিশ্বাসী তাদের চলমান সহিংসতা বন্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫
** সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের সম্পর্ক আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের সঙ্গে