ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি শেষ বর্ষের ছাত্র জুবায়ের হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হওয়ায় বুধবার (২৮ জানুয়ারি) রায়ের এ দিন ধার্য করেন ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪।
বুধবার আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন তিনি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন গত ৭ জানুয়ারি।
উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ হওয়ায় আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক।
মামলার ১৩ জন আসামি হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক, মো. রাশেদুল ইসলাম রাজু, খান মো. রইছ, জাহিদ হাসান, ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ, মাহবুব আকরাম, নাজমুস সাকিব তপু, মাজহারুল ইসলাম, কামরুজ্জামান সোহাগ, মো. নাজমুল হুসেইন প্লাবন, শফিউল আলম সেতু, অভিনন্দন কুণ্ডু অভি ও মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ। তারা সবাই জাবির বিভিন্ন ব্যাচ ও বিভাগের ছাত্র।
আসামিদের মধ্যে জামিনে থাকা ৬ জন আদালতে হাজির ছিলেন। তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামির কাঠগড়া থেকে মামলার চার আসামি খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মো. রইছ, ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ ও মাহবুব আকরাম পালিয়ে যান। তাদের ছাড়াই মামলার বিচার শেষ করা হয়।
আসামিদের মধ্যে মাহবুব আকরাম ও নাজমুস সাকিব তপু ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে মামলার ১৩ জন আসামির মধ্যে ৭ জন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে নিজেদেরকে নির্দোষ দাবি করেন।
এ মামলায় অভিযোগপত্রের ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মোট ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন নিহত জুবায়েরের ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকালীন প্রাণ-রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম বদিয়ার রহমান, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন ও পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক বর্তমান পিপলস ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আরজু মিঞা।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি বিকালে শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর জুবায়ের আহমেদের প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গবেষণাগারের পিছনে কুপিয়ে জখম করে। পরদিন ৯ জানুয়ারি ভোরে রাজধানীর বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জুবায়ের আহমদ।
জুবায়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায়। জুবায়েরের হত্যাকারীদের বিচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে সাভারের আশুলিয়া থানায় ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে।
২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মীর শাহীন শাহ পারভেজ।
পরবর্তীতে আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে এবং মামলার কাযক্রর্ম দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সরকারের নির্দেশনায় মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করা হয়।
এরপর ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫