ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অবরোধে পুলিশের স্বাভাবিক কাজও ব্যাহত হচ্ছে

টি. এম. মামনু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫
অবরোধে পুলিশের স্বাভাবিক কাজও ব্যাহত হচ্ছে

বগুড়া: হরতাল ও অবরোধের মতো কর্মসূচি সব সময়ই উন্নয়ন ও সম্ভবনাসহ সব রকম স্বাভাবিক কাজকে বাধাগ্রস্থ করে।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধেও এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটছেনা।

তবে সবকিছুর উপরে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

যাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা পুলিশ বাহিনী তার স্বাভাবিক রুটিন মোতাবেক কাজ করতে পারছেন না।

নিশ্চিত ভাবে বলা যায়, বিপদে মানুষ সবচেয়ে বেশি যাকে কাছে পায় তারা হলো পুলিশ। কিন্তু এখন একজন মানুষ বিপদে পড়লেও ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তাকে সহযোগিতা করতে পারছেনা পুলিশ। কারণ নিজ জীবন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সড়ক ও যানবাহনে নাশকতা ঠেকানো নিয়েই তারা বেশি ব্যস্ত। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণেই  ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে সহযোগিতা করা সম্ভব হয়ে উঠছেনা।    

রোববার (০১ ফেব্রুয়ারি) বাংলানিউজের অনুসন্ধানে এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে।

জেলার শাজাহানপুর উপজেলার সাইফুল ইসলাম বিমান নামের হত্যা মামলায় বাদি পক্ষের একজন বলেন, দীর্ঘদিন তার মামলাটি ঝুলে রয়েছে, পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করতে পারছেনা। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটির প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল। তদন্তকারী কর্মকর্তার স্বদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পরিস্থিতির কারণে অদ্যবধি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হয়নি।

প্রায় একই রকম কথা বলেছেন, জেলার সদরসহ ধুনট, শেরপুর, দুপচাঁচিয়া উপজেলার আশরাফ, আমিনুর রহমান, আবিদা সুলতানা, শামীম আহমেদসহ অনেকে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা।

দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোপাল চন্দ্র বাংলানিউজকে জানান, স্বদিচ্ছার কোনো রকম কমতি নেই। তবুও অবরোধ-হরতালসহ বিরাজমান পরিস্থিতিতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম ছাড়াও সাধারণ মানুষকে ন্যূনতম সেবাও দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। দুপচাঁচিয়া থানায় মারামারি, জমি সংক্রান্ত বিরোধসহ পারিবারিক অনেক অভিযোগ পুলিশ বসে সামাজিক ভাবে আপোষ-মীমাংসা করে দিয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এসব সেবা দেওয়া থেকে এড়িয়ে চলতে হচ্ছে নিজেদেরকে।  

শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আহম্মেদ হাশমী জানিয়েছেন, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও থানা পুলিশের স্বাভাবিক কর্মকান্ড হরতাল-অবরোধে দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সে অর্থে সেবার মান একেবারে শূণ্যের কোঠায়। সড়ক পাহাড়া আর নাশকতা ঠেকানো নিয়েই নির্ঘুম দিনরাত পার করতে হচ্ছে। প্রায় একই রকম কথা বলেছেন গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক(ওসি/ডিবি) আমিরুল ইসলাম।

বগুড়ার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক পিপিএম বাংলানিউজকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে মামলার তদন্ত ও এ সংশ্লিষ্ট কাজসহ রুটিন মাফিক দৈনিক যে স্বাভাবিক কাজ রয়েছে পুলিশের, সেগুলো করা সম্ভব হচ্ছেনা। যথেষ্ট কষ্ট করতে হচ্ছে জেলার সকল পুলিশ সদস্যকে। চেষ্টা চলছে সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে কিভাবে মানুষকে সেবা দেওয়া যায়।      

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।