ঢাকা: মাজার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে জাতীয় সংসদে দুই সদস্যের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী মাজার পরিচালনা কমিটি নিয়ে এ বাহাস হয়েছে।
ঢাকা-১৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আসলামুল হক এর এলাকায় অবস্থিত এ মাজার পরিচালনা ও সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করায় এ বির্তকের সূত্রপাত। দু’জনই ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য।
বুধবার (২৮ জানুয়ারি) সংসদ ভবনে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই বাক-বিতণ্ডা হয়।
কমিটির এ সিদ্ধান্তে শুরু হওয়া বাহাসের এক পর্যায়ে আসলামুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমার এলাকায় আমাকে না জানিয়ে কোনো কমিটি হতে পারে না। আমি ওই এলাকার এমপি। আমাকে না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হল। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়। পরে কমিটি সভাপতি বজলুল হক হারুনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, কমিটির আগের বৈঠকের সুপারিশ অনুযায়ী ওয়াকফ প্রশাসন মিরপুরের শাহআলী মাজার পরিচালনা ও এর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নজিবুল বশরকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে স্থানীয় সহকারী কমিশনার (ভুমি), স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধিসহ আরও অনেকে রয়েছেন।
কিন্তু কমিটির এ সিদ্ধান্তে বাদ সাধেন আসলামুল হক। যদিও তিনি এর আগে তিন-চার কমিটির বৈঠকে অংশ নেননি।
বৈঠকে কথার এক পর্যায়ে আসলামুল হক উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং নজিবুল বশরকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তবে নজিবুল বশর আত্মপক্ষ সমর্থন করেন এবং বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে নেওয়ার কথা বলেন।
এ বির্তকের সময় কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন আসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এখানে সকলেই সংসদ সদস্য। সবার মর্যাদা সমান। আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে শান্তভাবে বলেন। আমরা আপনার বক্তব্য শুনবো।
বিষয়টি নিয়ে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, আসলাম সাহেব মাজার কমিটির সভাপতি ছিলেন। পরে আদালত তা বাতিল করে দিয়েছে। তিনি এখন দাবি করছেন, সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন। কিন্তু আপিল বিভাগ তো কোনো স্থগিতাদেশ দেননি। এর আগে, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক দিয়ে কমিটি করা হয়েছিল। তারা সেখানে যেতেই পারেননি।
বৈঠকের পর বিতর্ক নিয়ে আসলামুল হক বলেন, ওয়াকফ স্টেট আইনের কিছু বিষয় মাইজভান্ডারী সাহেব বুঝতে সময় নিয়েছেন। তেমন কিছু ঘটেনি। আমরা তো দু’জনেই সংসদ সদস্য। সবকিছুই ঠিক আছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির এ বৈঠকে অংশ নেন এ.কে.এম.এ আউয়াল, মো. মকবুল হোসেন, মোহাম্মদ আমীর হোসেন এবং দিলারা বেগম। বিশেষ আমন্ত্রণে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানও বৈঠকে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫