ঢাকা, সোমবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

পর্যটক শূন্য খাগড়াছড়ি!

অপু দত্ত, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫
পর্যটক শূন্য খাগড়াছড়ি! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খাগড়াছড়ি: রিছাং ঝরনা, আলুটিলা, অ্যাডভেঞ্চার সুরঙ্গ কিংবা জেলা পরিষদ পার্ক- সবখানটাই এখন পর্যটক শূন্য। মনে হচ্ছে পর্যটক না থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছে এসব পাহাড়ের এসব দর্শনীয় স্থানগুলো।

ওইসব পর্যটন স্পটগুলোতে গেলে এখন দেখা মিলবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কিংবা হাতেগোন কয়েকজন লোক, তাও আবার স্থানীয়!

গত বছর এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি পর্যটকে মুখর ছিল খাগড়াছড়ি। এতোই বেশি ছিল যে, বছরের শেষে এসে হোটেল মোটেলগুলোতে জায়গা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু নতুন বছরের শুরুতেই দেখা গেলো উল্টো চিত্র। হরতাল, অবরোধের কারণে এখন পুরোই পর্যটক শুন্য খাগড়াছড়ি।

খাগড়াছড়ি আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকিট কাউন্টারের কর্মচারী পরিবেশক রতন ত্রিপুরা জানান, গেল বছরের শেষের দিকে যেখানে আলুটিলায় প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে, সেখানে এখন ৪০ থেকে ৫০ জন লোকের সমাগম ঘটছে, তাও আবার স্থানীয় লোকজন।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে এম জাকির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, গত বছরের অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর এ তিন মাসে যে পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতি ছিল জানুয়ারি মাসে তা অনেকটাই শুন্যের কোটায় নেমে এসেছে। এখন যারাই এখানে ঘুরতে আসেন সবাই স্থানীয়।

এদিকে পাহাড়ের ভূ-স্বর্গ নামে পরিচিত ‘সাজেক’ এলাকাটিও এখন পর্যটক শুন্য। সাজেক উন্নয়ন ফোরামের সদস্য সচিব থাংলাক লুসাই বাংলানিউজকে জানান, হরতাল, অবরোধের কারণে বাইরে থেকে পর্যটক আসতে পারছেনা।

এদিকে শীতের এমন মৌসুমে ঘুরতে আসার জন্য আগে থেকে হোটেল মোটেলে বুকিং করে রেখেছিল পর্যটকরা। কিন্তু দেশের চলমান অস্থিরতার কারণে বাতিল হয়ে গেছে।

খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ব্যবস্থাপক মইনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, নভেম্বর, ডিসেম্বর মাস পর্যটকে পূর্ণ ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় জানুয়ারি মাসেও পর্যটকদের অগ্রিম রুম বুকিং ছিল। কিন্তু হরতাল অবরোধের কারণে সব বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। এখন এক দু’টি রুম ছাড়া পর্যটন মোটেল পুরো খালি।

খাগড়াছড়ি হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এস অনন্ত ত্রিপুরা বলেন, দেশে এমন অস্থিরতা চলতে থাকলে পর্যটন শিল্প ক্ষতির মুখে পড়বে। এমন মৌসুমে যেখানে পর্যটন এলাকাগুলো পর্যটকে মুখরিত থাকার কথা, হোটেলগুলো পূর্ণ থাকার কথা। কিন্তু এখন বাস্ততে তার উল্টো চিত্র। যদি দেশে এমন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকে তাহলে দেশের পর্যটন শিল্প হুমকির মধ্যে পড়বে। তাই পর্যটন সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোকে হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখার দাবি জানান তিনি।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, খাগড়াছড়িতে পর্যটক দিন দিন বাড়ছে। কারণ এখানকার মনোরম পরিবেশ তাদের আকৃষ্ট করছে। কিন্তু দেশের চলমান অস্থিরতার কারণে নতুন বছর আসতে তা আবার কমে গেছে। তবে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খাগড়াছড়ি পর্যটক মুখর হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যদি এমন চলমান অস্থিরতা অব্যাহত থাকে তাহলে দেশের পর্যটন শিল্প হুমকির মধ্যে পড়বে। তাই রাজনৈতিক দলগুলো যেন পর্যটন এলাকাগুলোকে বাইরে রেখে নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।