ঢাকা: ফরমালিনের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণের লক্ষে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৫’ পাসের সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে বিলটি চূড়ান্ত করে পাসের সুপারিশ করা হয়।
এরআগে, ২১ জানুয়ারি সংসদে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন বা মজুদ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে এ বিলটি উত্থাপন করেন। পরে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটির বৈঠকে বিলটি যাচাই-বাছাই শেষে তা পাসের সুপারিশ করে সংসদে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ফরমালিন অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছ, শাকসবজি ও ফল দীর্ঘ সময় তাজা দেখাতে ব্যবহার করেন। যা নিয়ন্ত্রণ ও অপব্যবহার বন্ধে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চলছে। সর্বশেষ এ বিষয়ে আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি অধিবেশনেই এ সংক্রান্ত বিলটি পাস হওয়ার কথা রয়েছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রি ও ব্যবহার করা যাবে না। যারা লাইসেন্স পাবেন, তারাও চাওয়া মাত্র কর্তৃপক্ষকে ফরমালিন কেনাবেচার হিসাব দেখাতে বাধ্য থাকবেন। বিলে লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমাদনি, উৎপাদন বা মজুদ করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানারও বিধান রাখা হয়েছে।
আর লাইসেন্সের শর্ত ভাঙলে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান থাকছে। লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন পরিবহন করলে সর্বোচ্চ ২ বছর থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ থেকে তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়- এমন যন্ত্রপাতি রাখলেও দণ্ডের বিধান রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে ২ বছর থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংযুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে- আইনটি কার্যকর হলে ফরমালিন ব্যবহার ও ব্যবসা কার্যক্রম আইনি কাঠামোর আওতায় আসবে। বর্তমান ও ভবিষ্যতে যে সব কোম্পানি ফরমালিন ও ফরমালিন জাতীয় দ্রব্য বিপণন করবে, তাদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, এনামুল হক, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, মন্জুরুল ইসলাম লিটন ও লায়লা আরজুমান বানু এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫