ঢাকা: আর্সেনিকে আক্রান্তদের অর্ধেকই (৪৮ শতাংশ) চিকিৎসা সেবার বাইরে বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ জানুয়ারি) জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে ‘এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেল্থ’ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে এ মন্তব্য করেন আর্সেনিক প্রশমন সংক্রান্ত কার্যক্রমে কর্মরত সরকারি, বেসরকারিসহ অন্যান্য পলিসি লেভেল স্টেকহোল্ডাররা।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জুয়েনা আজিজ।
এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পলিসি সাপোর্ট ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক কাজী আব্দুল নূর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার খালেদা আহসান।
সংলাপে আর্সেনিকোসিস রোগী ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ ক্যাসেল ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার ড. আবুল হাসনাত মিল্টন এবং সূচনা বক্তৃতা করেন এনজিও ফোরামের নির্বাহী পরিচালক এস এম এ রশীদ।
সংলাপে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের ৬২টি জেলার ২৭১টি উপজেলার ২ কোটি ৯০ লাখ মানুষ আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর ৭ কোটি মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পানজনিত সম্ভাব্য ঝুঁকির সম্মুখীন রয়েছেন। আর্সেনিকোসিস রোগে আক্রান্ত হতদরিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তি ও পরিবার শুধু অর্থনৈতিক দিক দিয়ে নয় বরং পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ সব দিক থেকেই বহুমুখী সমস্যা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। যার প্রভাব জিডিপি’র উপরও পড়ছে। আর্সেনিক সংক্রামণের কারণে দেশের জিডিপির শতকরা দশমিক ৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
প্রবন্ধে আরো বলা হয়, দেশে আর্সেনিকোসিস রোগীদের ৬১ শতাংশই নারী। যাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। আক্রান্তদের বড় অংশ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত।
সংলাপে বক্তারা বলেন, কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদসহ অন্যান্য অনেক সংস্থা কোনো ধরণের পরীক্ষা ছাড়াই আর্সেনিক আক্রান্ত এলাকায় নলকূপ স্থাপন করছে। আর্সেনিক খাতে নির্ধারিত বরাদ্দের ব্যবহারে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। ২০০৪ সালে সরকার কর্তৃক গৃহীত ‘ন্যাশনাল পলিসি ফর আর্সেনিক মিটিগেশন ২০০৪’ যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এবিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বরিশাল, চাঁদপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, কুমিল্লা, ফরিদপুর, লক্ষ্মীপুর, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নোয়াখালী জেলার অধিকাংশ এলাকাই আর্সেনিক ঝুঁকিপূণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। এসব অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী মারাত্মকভাবে আর্সেনিকজনিত রোগ-ব্যাধির শিকার। তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরী।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫