ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রমেক হাসপাতাল

এমআরআই মেশিন বিকল, রোগীদের দুর্ভোগ

সাজ্জাদ বাপ্পী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫
এমআরআই মেশিন বিকল, রোগীদের দুর্ভোগ ফাইল ফটো

রংপুর: রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (রমেক) রোগ নির্ণয়কারী দুটি এমআরআই মেশিন দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এ কারণে রংপুর বিভাগের আট জেলার শত শত রোগী বিপাকে পড়েছেন।

 

যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে গিয়ে বেশি টাকায় এমআরআই করাচ্ছেন। কিন্তু দরিদ্র্য রোগীরা তা করতে পারছেন না।

এ সপ্তাহের মধ্যেই মেশিন মেরামতের আশ্বাস দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্ত‍ৃপক্ষ। কিন্তু তারপরেও চালু হয়নি এ মেশিন দুটি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাথা এবং মেরুদণ্ডসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের রোগ নির্ণয় করতে এমআরআই মেশিন ব্যবহার হয়ে থাকে।

রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে শুধু রমেক হাসপাতালেই রয়েছে এমআরআই মেশিন। এজন্য এ বিভাগের শত শত রোগী এ হাসপাতালে ভীড় করে থাকেন।
 
হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩ জুলাই থেকে ট্রেসলা হিটাচি এমআরআই মেশিন এবং একই বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে ট্রেসলা ফিলিপস এমআরআই মেশিন বিকল হয়ে আছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে রংপুর বিভাগের আট জেলার শত শত রোগী। বাধ্য হয়ে তারা বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে গিয়ে সাত থেকে আট হাজার টাকায় রোগ নির্ণয় করে থাকেন।

দিনাজপুর থেকে আসা রোগী ফাতেমা বেগম জানান, রমেক হাসপাতালে এমআরআই করতে খরচ পড়ে মাত্র তিন হাজার টাকা। আর বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে লাগে আট হাজার টাকা। তাও সঠিক সময়ে রিপোর্ট পাওয়া যায় না।

রেডিওলোজি ও ইমেজিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আলতাফ হোসেন জানান, এমআরআই মেশিন দুটি বিকল হওয়ার পর হাসপাতালের পরিচালকের মাধ্যমে সরবরাহকারী কোম্পানিকে জানানো হয়েছে। ওই কোম্পানির প্রকৌশলীরা তা পরীক্ষা করে সমস্যা সনাক্ত করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে হাসপাতাল থেকে নতুন যন্ত্রাংশ চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পত্র দেওয়া হয়েছে।

ট্রেসলা ফিলিপস এমআরআই মেশিনটি বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান আলতাফ হোসেন। তার দাবি এক সপ্তাহের মধ্যে তা চালু হতে পারে।
 
তবে ট্রেসলা হিটাচি এমআরআই মেশিন কবে নাগাদ চালু হবে তা সুস্পষ্ট করে জানাতে পারেননি তিনি।
 
রমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল কাদের হাসপাতালে এমআরআই মেশিন বিকল থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, সব ঠিকঠাক থাকলে বিকল হওয়া একটি মেশিন এক সপ্তাহের মধ্যে চালু হবে।

অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে এমআরআই মেশিন দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু চিকিৎসক ব্যবসা করছেন। এ কারণেই রমেক হাসপাতালের এমআরআই মেশিন নানা কৌশলে বিকল করে রাখা হয়েছে।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী-কর্মকর্তা এই অভিযোগ করে বলেন, বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোতে অধিকাংশ সরকারি চিকিৎসক জড়িত রয়েছেন।
 
সমাজ পরিবর্তন উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি এসএম পিয়াল বলেন, অত্যাধুনিক এমআরআই মেশিন সরকারি চিকিৎসকদের গলার কাঁটা। তারা তাদের ব্যবসা সচল রাখতে ইচ্ছাকৃতভাবে এমআরআই মেশিন বিকল করে রেখেছেন।

তিনি রোগীদের স্বার্থে অবিলম্বে এমআরআই মেশিন চালুর দাবি করেন।

২০০৭ সালে রমেক হাসপাতালে প্রথমে একটি দিয়ে শুরু হয়। ২০১২ সালে আরও একটি মেশিন যোগ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।