বইমেলা থেকে: রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের কারণে আগের মতো বইমেলায় ঘুরতে না পারায় আফসোস করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, একসময় বইমেলায় আসতাম।
রোববার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এভাবেই বললেন।
তিনি বলেন, আমার মনে একটা দু:খ। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাকে শৃঙ্খলে (প্রটোকলে) বন্দি থাকতে হয়। চাইলেও ঘুরে ফিরে বই কেনা যায় না।
তিনি বলেন, যারা বইমেলায় আসেন। ঘুরে ঘুরে বইয়ের স্বাদ আস্বাদন করেন তাদের নিয়ে আমার হিংসা হয়। আমার দু:খ হয় এই কারণে যে, মানুষ কতো সুন্দরে, আনন্দ নিয়ে বই কিনছে, অথচ আমি কিনতে পারছি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসময় বইমেলায় আসতাম। ঘুরে ঘুরে বই কিনতাম।
তিনি বলেন, বই পড়ার অভ্যাস সকলের জন্য একান্ত প্রয়োজন। আমি সময় পেলে বই পড়ি।
উদ্বোধন শেষে গ্রন্থমেলা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় মহান একুশের চেতনালালিত মাসব্যাপী এ মেলা।
বাংলা একাডেমির আয়োজনে মাসব্যাপী এ মেলা এবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি চত্ত্বরে দু’ভাগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিকেল তিনটায় বাংলা একাডেমি চত্ত্বরে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলা’২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বাংলা একাডেমির সভাপতি প্রফেসর এমেরিটাস আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
একই মঞ্চে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনে আসা বিদেশি অতিথিদের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জার্মানির সাহিত্যিক হান্স হার্ডার, ফরাসি লেখক ফ্রাঁস ভট্টাচার্য, বেলজিয়ামের সাহিত্যিক ফাদার দ্যতিয়েন এবং ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য গবেষক ও ভাষাবিদ ড. পবিত্র সরকার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’২০১৫ প্রাপ্ত লেখকদের হাতে পুরস্কারের ক্রেস্ট, সম্মাননাপত্র ও এক লাখ টাকা তুলে দেন।
এ বছর মেলায় মোট ৩শ’ ৫১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গণে মোট ৫শ’ ৬৫টি ইউনিট ও ১১টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট ২৯৫টি বেসরকারি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ৪৭৫ ইউনিট স্টল রয়েছে। আরও শতাধিক প্রতিষ্ঠান মূল একাডেমি অঙ্গণে স্টল করেছে।
এবার মেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের খেলাধুলার জন্য একটি বিনোদন কেন্দ্রেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া মেলায় রয়েছে দু’টি লেখক কুঞ্জ।
বইমেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার।
প্রতিবারের মতো এবারও মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হবে আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৫