ঢাকা: বাংলাদেশে জামায়াত-বিএনপির চলমান সন্ত্রাস ও নাশকতার সঙ্গে পাকিস্তানি দূতাবাসের সম্পৃক্ততার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারকে কঠোর হুশিয়ারি বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি পাকিস্তানি দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কূটনীতিক মোহাম্মদ মাযহার খানের যাবতীয় মর্যাদা ও সুবিধা বাতিলের দাবি জানানোর আহবান জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার(২ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনের সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহবান জানায় নির্মূল কমিটি।
বিবৃতিতে নির্মূল কমিটির নেতারা বলেন, আজ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ভারতীয় মুদ্রা জাল এবং জঙ্গিদের অর্থায়নের জন্য পাকিস্তানি দূতাবাসের কূটনীতিক মোহাম্মদ মাযহার খানের গ্রেফতার এবং ‘কূটনৈতিক সুবিধা’র সুযোগে তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ আমাদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে। এসব সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নাশকতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত পাকিস্তান দূতাবাসের ওই কূটনীতিক।
সংবাদে বলা হয়েছে ‘ঢাকায় পাকিস্তানি হাইকমিশনের সহকারী ভিসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাযহার খান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সমন্বয় ও অর্থায়ন করেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস’র অন্যতম সংগঠকও এই পাকিস্তানি। পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহরির, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম এবং জামায়াত-শিবিরকে’।
‘মাযহার খান নামে ওই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশবিরোধী ভয়ঙ্কর সব তৎপরতার তথ্য-প্রমাণ পেয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে চলছে তোলপাড়। বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার সন্দেহও করছেন কেউ কেউ। সরকারি সূত্রগুলো বলছে, জঙ্গি তৎপরতাই শুধু নয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মুদ্রাবাজার ধ্বংস করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেন তিনি। এজন্য পরিচালনা করেন ভারতীয় জাল রুপির এক বিশাল নেটওয়ার্ক। ধরাও পড়েছিলেন গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। কিন্তু ‘কূটনৈতিক সুবিধা’ নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেয় ঢাকার পাকিস্তান দূতাবাস’।
‘বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় জড়িত এই কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে গোপনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানে’।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা মনে করি, এহেন ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা কোনোভাবেই ‘কূটনীতিকের সুবিধা’ পেতে পারেন না। বাংলাদেশ সরকারের উচিত, এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারকে কঠোর হুশিয়ারি বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি ওই কূটনীতিকের যাবতীয় মর্যাদা ও সুবিধা বাতিলের দাবি জানানো। পাকিস্তান যদি ওই ব্যক্তির কূটনৈতিক মর্যাদা ও সুবিধা বাতিল না করে, তাহলে ধরে নিতে হবে এ ঘটনা পাকিস্তান সরকার ও তাদের দূতাবাসের জ্ঞাতসারেই ঘটেছে।
নির্মূল কমিটির নেতারা বিবৃতিতে আরও বলেন, আমরা দীর্ঘকাল ধরে বলছি, পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বাংলাদেশে পাকিস্তানি দূতাবাস এবং বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে এদেশের জঙ্গিদের অর্থায়নসহ সবরকম পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তানি কূটনীতিক মাযহার খানের গ্রেফতার এবং তাকে দ্রুত ছাড়িয়ে নিয়ে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর ঘটনা আবারও প্রমাণ করেছে, পাকিস্তান এখনও তাদের এদেশীয় এজেন্টদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ‘দ্বিতীয় পাকিস্তান’ বানাবার চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৫