ঢাকা: গত এক সপ্তাহে নওগাঁ জেলার মান্দায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের ৬ সদস্যের একটি টিম এলাকা পরিদর্শনে যাবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দুই শিশু হলো, উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের ভালাইন গ্রামের মকলেছুর রহমানের ছেলে আপেল মাহমুদ (১১) ও আবুল কাসেমের ছেলে কাওসার আলী (১৩)। অপরজন পরানপুর ইউনিয়নের বালুবাজার গ্রামের আলিমুদ্দীনের ছেলে হাফিজুল ইসলাম (২৫)।
শিশু আপেল মাহমুদের মা জুলেখা বিবি জানান, ২০ জানুয়ারি খেজুরের রস পান করার দুইদিন পর আপেল জ্বরে আক্রান্ত হয়। সেদিনই বিকেলে তাকে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করে আপেল।
একই ঘটনায় কাওসার আলীকে ২৪ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২৯ জানুয়ারি পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। পরদিন ৩০ জানুয়ারি সকালে তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে বালুবাজার গ্রামের হাফিজুল ইসলাম (২৫) বরই খেয়ে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জানুয়ারি তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক রিপোর্ট দাখিল না করায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) ফয়েজ উদ্দিন তরফদার ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক তাইজুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. মোজাহারুল ইসলাম জানান, মারা যাওয়া দুই শিশুসহ তিনজনের লালা ও রক্ত পরীক্ষা করে নিপাহ ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। ঘটনার তদন্তে ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী, ডা. মনোরঞ্জন মন্ডল ও ডা. আল মাসুদ মিজানুর রহমানকে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ে ৬ সদস্যের একটি টিম এলাকা পরিদর্শনে আসবেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. মোজাহারুল ইসলাম।
নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর বিষয়টি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের এখনো ‘আউটব্রেক’ হিসেবে এই তিন মৃত্যুও ঘটনা উল্লেখ করা হয়নি।
আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৫