ঢাকা, বুধবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ধামরাইয়ে স্কুলের জমি দখল করে দোকান!

ধামরাই থেকে সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৫
ধামরাইয়ে স্কুলের জমি দখল করে দোকান! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ধামরাই (ঢাকা): ধামরাইয়ে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের জমি দখল করেছেন বিদ্যালয়েরই এক শিক্ষিকা ও তার ভাসুর। সেখানে তারা একটি সেমিপাকা ঘর ও একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে ভাড়াও দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।



এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের জমি দখলমুক্ত করার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ থেকে জানা গেছে, উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নওগাঁ মৌজায় ৫০নং নওগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে আরএস ৩০৭১ ও ৩০৭২ নং দাগে ৮১ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই জমির মধ্যে পাঁচ শতাংশ জায়গা দখল করে ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বোন একই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এসএম জাহানারা আক্তার ও তার চাচাতো ভাসুর আসাদুল্লাহ। দখলকৃত জমিতে একটি সেমিপাকা ও একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে ভাড়াও দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, একটি মাঠের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে বিদ্যালয়ের দু’টি পাকা ভবন রয়েছে। দক্ষিণ পাশের বিদ্যালয়ের ভবন ঘেঁষে একটি টিনসেড ঘর রয়েছে। দখলকৃত জায়গার মধ্যে ঘরটি নির্মাণ করেছেন জাহানারা আক্তার। ঘরটির দেয়ালে লেখা রয়েছে ত্রি-রতœ এন্টারপ্রাইজ, যা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ওই ঘরের দক্ষিণ পাশে বিদ্যালয়েরই জায়গার ওপরেই আরেকটি টিনের ঘর রয়েছে, যা দখল করেছেন ওই শিক্ষিকার চাচাতো ভাসুর আসাদুল্লাহ। দখলকৃত

আসাদুল্লাহর টিনের ঘরে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে পপুলার মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির নিকট এই ঘরটি দায়বদ্ধ। তবে আসাদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে শিক্ষিকা এসএম জাহানারা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, স্কুলের জায়গা দখল করা হয়নি। ফাঁকা জায়গা ছিল। তাই সেখানে ঘর উত্তোলন করেছি।

তবে স্থানীয়দের মধ্যে মহিউদ্দিন নামক এক ব্যক্তি বলেন, ছোটবেলা থেকেই জেনে এসেছি, শিক্ষিকা জাহানারা যেখানে ঘর উত্তোলন করেছেন, সেটি বিদ্যালয়েরই জায়গা।

এছাড়া স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল লতিফ মাতবর (৮৫) জানান, ১৯৩০ সালে ইব্রাহিম ও সামসুল ইসলাম নামের দুই সহোদর বিদ্যালয়টির নামে ৮১ শতাংশ জমি দলিল করে দিয়েছেন। জাহানারা ও আসাদুল্লাহের নির্মাণ করা ঘর দু’টি স্কুলের জায়গার মধ্যেই পড়েছে। তাদের দখলকৃত জমি স্কুলেরই ছিল। এখন ক্ষমতার দাপটে তারা দখল করে নিয়েছেন।

ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জুয়েল হোসেন বলেন, দখলকারীরা এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। আমি তাদের কিছুই বলতে পারবো না।

বিদ্যালয়টি নওগাঁ হাট-বাজার সংলগ্ন হওয়ায় দখলকৃত জায়গার মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তাহের।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক আবু হানিফ  বাংলানিউজকে বলেন, দখলকৃত জমি বিদ্যালয়ের কি-না আমার জানা নেই। তবে বিদ্যালয়ের জায়গায় ঘরটি উত্তোলন করা হলে তা অবশ্যই অপসারণ করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দৌলতর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময় : ১১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।