ঢাকা, বুধবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

জুবায়ের হত্যা মামলার রায়

সর্বোচ্চ শাস্তির অপেক্ষায় বাবা-মা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৫
সর্বোচ্চ শাস্তির অপেক্ষায় বাবা-মা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পটুয়াখালী: ৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে বুধবার (৪ ফেব্রুয়ারি)।

এই রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেখতে চান নিহত জুবায়েরের বাবা-মা।



সোমবার বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া শহরে জুবায়েরের গ্রামের বাড়িতে তার বাবা-মার সঙ্গে কথা বলতে গেলে সন্তান হারানো বাবা-মা কান্নাজড়িত কন্ঠে এ কথা জানান।

নিহত জুবায়েরের মা হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘বুকের ধন চলে গেছে, তাকে তো আর ফিরে পাবনা। কিন্তু যারা আমার বুকের ধনকে কেড়ে নিল তাদের যেন ফাঁসি হয়। তাহলে হয়তো একটু সান্ত্বনা পাব যে, অন্তত মৃত্যুর আগে ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার পেয়েছি। ’

তিনি জানান, ২০১২ সালের কোরবানির ঈদের ছুটিতে শেষবারের মত বাড়িতে এসেছিল জুবায়ের। তার সঙ্গে শেষ কথা হয় ওই বছর জানুয়ারির ৮ তারিখ সকালে। ওইদিন জুবায়েরের অনার্স শেষ বর্ষের শেষ পরীক্ষা ছিল। কথা ছিল ওই দিন পরীক্ষা দিয়ে রাতের গাড়িতে বাড়ি আসবে সে।

কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ‘বিকেলে ফোন দিইনি। কারণ পরীক্ষার পর হয়তো বিশ্রামে আছে তাই। রাতে ফোন পাই যে জুবায়ের অসুস্থ। সাভারের এনাম হাসপাতালে ভর্তি। কথা বলার ইচ্ছা ছিল। বলতে পারেনি। ওর এক বন্ধ শুধু বলছে আন্টি আপনি ঢাকায় আসেন। কিন্তু কলাপাড়া থেকে তখন ওই রাতে ঢাকা যাবার কোনো গাড়ি না থাকায় পরের দিন সকালে ঢাকা যাওয়ার আয়োজন করি। কিন্তু ৯ তারিখ ভোরে ওর মৃত্যুর সংবাদ শুনি। পরীক্ষার পর বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু বাবা আমার লাশ হয়ে আসলো। ’

জুবায়েরের বাবা মো. তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের সম্পদ চলে গেছে। ওর আশা ছিল বিসিএস দিয়ে দেশের বড় কিছু হবে। কিন্তু কিছুই হলোনা। যাদের কারণে হলোনা এখন  তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। ’

তিনি জানান, ছেলে হত্যার পর তার‍া নিরাপত্তাহীনতায় ভ‍ুগছেন। আসামিরা এখনো হুমকি না দিলেও রায় ঘোষণা হলে তাদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি সরকারের কাছে এ জন্য পরিবারের নিরাপত্তা চান।

২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি অনার্স শেষ বর্ষের শেষ পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী জুবায়েরকে  ডেকে নিয়ে রড দিয়ে বেদম মারধরে করে। পরদিন ভোর ৫টার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪।

জুবায়ের জাবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ছাত্র ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।