কুমিল্লা: কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে ভাগিনা মাহমুদুল হাসান শান্তর (১৪) মরদেহ খুঁজে পেলেও বোন আসমা আক্তার (৩৮) কোথায় আছেন তা তিনি জানেন না। তাকে এখনো খুঁজে পাননি দুলাল মিয়া।
বোনের খোঁজে চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছেন দুলাল মিয়া। কিন্তু কোথাও ভর্তি নেই তার বোন আসমা।
দুঘর্টনার খবর পেয়ে নরসিংদী থেকে কুমিল্লায় এসেছেন দুলাল মিয়া। বড় ভাগিনা মাহমুদুল হোসানকে জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় পেয়েছেন। পরে কুমেক হাসপাতাল মর্গে এসে পেয়েছেন ছোট ভাগিনার মাহমুদুল হাসান শান্তর মরদেহ। কিন্তু কোথাও বোনের দেখা পাচ্ছেন না। বুক ভরা দুঃখ নিয়ে এদিক ওদিক খুঁজে ফিরছেন আদরের ছোট বোনটিকে।
দুলাল মিয়া জানান, আসমা ও তার দুই ছেলে কক্সবাজার থেকে গতরাতে আইকন বাসে করে ঢাকা ফিরছিলেন। পথে এ দুঘর্টনার কবলে পড়েন। অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় যখন পুরো বাসে আগুন জ্বলছে তখন টের পেয়ে বড় ভাগিনা হোসান জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে বাইরে বের হলে প্রাণে বেঁচে যায়। ছোট ভাগিনা শান্ত ও বোন আসমা নামতে পারেনি।
তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ভাগিনা আমার পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে, কিন্তু বোনটা কোথায় আছে তা জানিনা।
মঙ্গলবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর পৌনে ৪টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজারের জগমোহনপুর এলাকায় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় ঘটনাস্থলেই সাতজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন কমপক্ষে ২৬ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জন চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, নয়জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এবং দু’জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া এলাকার কৃষক ইউসুফ (৫৫), যশোর জেলার পিডব্লিউডির ঠিকাদার নুরুজ্জামান পবলু (৫০) ও তার মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী মাইশা নাইমা তাসনিন (১৬), ঢাকার কাপ্তানবাজার এলাকার ওয়াসিম ও নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার পলাশ গ্রামের মাহমুদুল হাসান শান্ত (১৬)।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৫