বরিশাল: কালজয়ী 'জয় বাংলা' স্লোগানকে ধারণ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল তরুণদের তুলে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে ইয়াং বাংলা।
নীরবে নিভৃতে দেশ ও জাতির উন্নয়নে, মানুষের সেবায় যারা কাজ করে যাচ্ছেন তাদের কৃতিত্বকে দেশ ও জাতির কাছে তুলে ধরে পুরষ্কৃত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইয়াং বাংলা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা তরুণদের ব্যবসায়ীক উদ্যোগ, সামাজিক উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ ও অভূতপূর্ব উদ্ভাবনসহ ইতিবাচক অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে সংগঠনটি দিতে যচ্ছে 'জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড'।
পাশাপাশি দেশের তরুণদের সরাসরি রাষ্ট্রের কাজে যুক্ত করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, ডাক-টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রাণালয়সহ তিনটি মন্ত্রণালয়ে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার সুযোগ করে দিবে এ সংগঠনটি।
শনিবার বরিশাল সরকারি বিএম (ব্রজমোহন) কলেজ মাঠে ইয়াং বাংলা তাদের এ কার্যক্রমের কথা জানায়।
‘ইয়াং বাংলা ডিভিশনাল মিট’ নামে এ অনুষ্ঠানে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই শতশত তরুণ ইয়াং বাংলা’র কার্যক্রম দেখতে শনিবার বিকেলে কলেজ মাঠে ভিড় জমায়। এসেছিলেন তরুণীরাও।
এদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থী হওয়ায় অনেকেই এসেছেন ওই তিনটি মন্ত্রণালয়ে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে।
বিকেল ৩টা থেকে ইয়াং বাংলার রেজিস্ট্রেশন শুরু হলেও মূল অনষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও চলমান হরতাল-অবরোধে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ইয়াং বাংলার আহ্বায়ক নাহিম রাজ্জাক এমপি মঞ্চে উঠে ইয়াং বাংলা এবং জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, তরুণ-যুব সমাজের ভবিষ্যতকে নিশ্চিত করার মন্ত্রই হচ্ছে জয় বাংলা। কালজয়ী স্লোগান ‘জয় বাংলা’-নামে দুটি শব্দ দিয়েই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুরো বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
এখনো বাংলার ১৬ কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ গড়ার মূলমন্ত্র সেই জয় বাংলা। জয় বাংলার মন্ত্রকে বাস্তব রূপ দিতে হলে আমাদের দরকার ঐক্য। নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ দিতে আমাদের ডাক হচ্ছে-জয় বাংলার ডাক।
তিনি বলেন, হিসেব মতে দেশে বর্তমানে চারকোটি তরুণ রয়েছে। আর এ যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভিশন ২০২১ কে বাস্তব রূপ দিতে হবে। তরুণদের উদ্যোগেই ডিজিটাল, মধ্য আয়ের বাংলাদেশ, ২০২১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ তা গড়তে হবে।
আর যুব সমাজের প্রতিভা বিকাশে সরকারি এবং বেসরকারি যে উদ্যোগ তার সমন্বয় ঘটাতে হবে।
জাতীয় পর্যায়ের যুব সংগঠন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই), জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল(জেসিআই), বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন, ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ইউনাইটেড নেশন ইয়ুথ অ্যান্ড স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করে ইয়াং বাংলার সৃষ্টি বলে জানান তিনি।
সংগঠনটির আহ্বায়ক তরুণ সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, আজ তরুণদের একত্র করেছে ইয়ং বাংলা। এদের মধ্য থেকে বাছাই করে পুরষ্কৃত করা হবে সাহসী তরুণদের। আর পুরো দেশ থেকে ছয়শ মেধাবী তরুণ পাবেন তিনটি মন্ত্রণালয়ে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার সুযোগ।
যুব সমাজের অর্জন সমূহকে প্রচারের মাধ্যমে উজ্জীবিত করা এবং প্রচারের মাধ্যমে যুব সমাজের বন্ধন তৈরি করা হচ্ছে ইয়াং বাংলার মূল উদ্দেশ্যে।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের দিন অর্থাৎ ৭ মার্চ তারা মোট ১০টি ক্যাটাগরিতে 'জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড' তুলে দেবে ৩০ জন সফল তরুণের হাতে। পাণ্ডুলিপি ও উদ্ভাবনী প্রমাণাদি জমাদানকারীদের মধ্যে থেকে বাছাইকৃতরা ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের জন্য বরিশাল থেকে মনোনীত হবেন।
তারা দেশের ৭ বিভাগীয় শহরে ‘ইয়াং বাংলা ডিভিশনাল মিট’ এর আয়োজন করছেন পর্যায়ক্রমে এটি জেলা পর্যায়েও করা হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল সদর আসনের এমপি জেবুন্নেছা আফরোজ, কুমিলা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের এমপি রাজিব আহম্মেদ রাজীব, ইয়াং বাংলার সংগঠক রায়হান সাকিব ও বাংলাদেশ ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শুকরানা প্রমুখ।
এছাড়াও বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল আলম, বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুলহকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বরিশালের ৬ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত তরুণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ মিলনমেলায় নানান স্লাইড শো ও ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন, উদ্যোমী ও নিজ ক্ষেত্রে সফল উদ্যোক্তাদের ইচ্ছে, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ও দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার ইচ্ছে প্রকাশের মধ্য দিয়ে চলে মূল অনুষ্ঠান। মূল অনুষ্ঠান শেষে আয়োজন করা মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৫