জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: আলোচিত জুবায়ের হত্যা মামলায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৮ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পাসে এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে মিছিল করেছে তারা।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা জুবায়ের আহমেদকে কুপিয়ে জখম করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রেখে যান। পরদিন ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান তিনি।
জুবায়ের হত্যার পরদিন থেকেই বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের ফলে প্রশাসন অভিযুক্ত ৭ ছাত্রকে আজীবন এবং ৬ ছাত্রকে ২ বছরের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। তাছাড়া প্রশাসন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও দায়ের করে।
রোববার এ মামলার রায়ে ৫ জনকে ফাঁসি, ৬ জনকে যাবজ্জীবন ও ২ জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এ রায়কে ধারাবাহিক ছাত্র আন্দোলনের সফলতা হিসেবে দেখছে।
এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি তন্ময় ধর ও সাধারণ সম্পাদক দীপাঞ্জন সিদ্ধার্থ কাজল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা আন্দোলনের পরে আদালতের এ রায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিপরীতে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। এ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হল, তা শুধু রায় দ্রুত কার্যকর করার মধ্য দিয়েই পরিপূর্ণতা পেতে পারে।
অপর এক বিবৃতিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা বলেন, দীর্ঘ দুই বছরের ধারাবাহিক ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্থাপিত হল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক অনন্য মাইলফলক। এ মামলার পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার এবং রায় কার্যকর করার আহবান
জানাচ্ছি।
ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, আদালতে যে রায় দেওয়া হয়েছে তার প্রতি আমাদের আস্থা আছে এবং আমরা এতে স্বস্তি প্রকাশ করছি। সম্ভবত বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই প্রথম কোনো হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়েছে।
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দীন বলেন, জুবায়ের হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা যারা আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তাদের জন্য আজকের দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৫