ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন ও কিশোরগঞ্জ জেলা বারের আইনজীবী শামসুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত বা অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের দিন পিছিয়ে আগামী ৩০ মার্চ পুনর্নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গ্রেফতারকৃত শামসুদ্দিন আহমেদের সম্পত্তির হিসাব আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দাখিলের নির্দেশ দিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি তার জামিনের আবেদনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে।
একই মামলার আসামি এই দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাই শামসুদ্দিন আহমেদকে গত বছরের ২৭ নভেম্বর গ্রেফতার করা হলেও বড় ভাই মো. নাসিরউদ্দিন পলাতক। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন গত বছরের ২৬ নভেম্বর চূড়ান্ত করে প্রসিকিউশনে দাখিল করলেও আরও তদন্তের জন্য ফেরত পাঠিয়েছেন প্রসিকিউশন।
মঙ্গলবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নাসিরউদ্দিন-শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত বা অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে নতুন করে তদন্তে নতুন নতুন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও দুই মাস সময়ের আবেদন জানান প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন। অন্যদিকে শামসুদ্দিনের জামিনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আতিকুর রহমান। তিনি দাবি করেন, ১৯৭১ সালে শামসুদ্দিনের বয়স ছিল ১৩ বছর। তিনি কিভাবে রাজাকার হলেন?
শুনানি শেষে তদন্তের চূড়ান্ত বা অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের দিন পিছিয়ে আগামী ৩০ মার্চ পুনর্নির্ধারণ করেন চেয়ারম্যান এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া শামসুদ্দিন আহমেদের সম্পত্তির হিসাব আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দাখিলের নির্দেশ দিয়ে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি তার জামিনের আবেদনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ২৭ নভেম্বর দুই সহোদর মো. নাসিরউদ্দিন ও মো. শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। শামসুদ্দিন আহমেদকে ওইদিনই রাত পৌনে ৯টার দিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মহাসড়ক থেকে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ৩০ নভেম্বর দুপুরে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন ট্রাইব্যুনাল। অপর আসামি তার বড় ভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন পলাতক রয়েছেন।
এর আগে ২৬ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করেন তদন্ত সংস্থা। তবে আরও তদন্তের জন্য ফেরত পাঠিয়েছেন প্রসিকিউশন।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার করিমগঞ্জ মধ্যপাড়া (দুলিপাড়া) গ্রামের এই দুই ভাইয়ের বাবার নাম মৃত আব্দুর রাজ্জাক মুন্সি ও মায়ের নাম মৃত লুৎফুন্নাহার লতা। তারা একাত্তরে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে করিমগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত হন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল।
এ মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে গত বছরের ৬ জুন তদন্ত করছেন তদন্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান।
আসামি দু’জনের মধ্যে বড় ভাই নাসিরউদ্দিন সেনাবাহিনীর ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই তিনি সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করেন। ২০০২ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি অকালীন বাধ্যতামূলক অবসরে যান। অন্যদিকে ছোট ভাই শামসুদ্দিন কিশোরগঞ্জে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫