ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘বসন্তের পূর্ণতায় ঘুচে যাক কালো আঁধার’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫
‘বসন্তের পূর্ণতায় ঘুচে যাক কালো আঁধার’ ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চারুকলা, বকুলতলা থেকে: তারুণ্য, নতুন এবং চির সুন্দরের আহ্বানে ফাগুনের প্রথম প্রহরে বসন্ত বন্দনা, বসন্ত কথন, ফুলের প্রীতি বন্ধনী বিনিময়, আবির বিনিময়, বসন্ত আড্ডায় বরণ করে নেওয়া হয়েছে ঋতুরাজ বসন্তকে।
 
বরাবরের মতো এবারও জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ আয়োজন করেছে ‘বসন্ত বরণ উৎসব-১৪২১’।

শুক্রবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বকুল তলায় বসে বসন্ত বরণের এ উৎসব।
 
‘এসো প্রাণের উৎসবে’ আহ্বানে যন্ত্রসঙ্গীতের মূর্ছনায় সকাল ৭টায় শুরু হয় এ উৎসবের। এরপর চলে বসন্ত বন্দনা। চলে গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, দলীয় সঙ্গীত, একক সঙ্গীতের পরিবেশনা। কীরণ চন্দ্র রায়, ফেরদৌস আরাসহ দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের পরিবেশনার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা পরিবেশন করে বসন্তের গান, আবৃত্তি, নাচ।  

উৎসবে এক এক করে গাওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়সহ সহ বিভিন্ন কবি শিল্পীদের গান। ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় ধরেছি যে গান’, ‘ওরে ও গৃহবাসী খোল দ্বার খোল/লাগলো যে দোল/জলে-স্থলে বনতলে লাগলো যে দোল..’ ‘আহা আজি এ বসন্তে/কত ফুল ফোটে’ সহ অসংখ্য গান পরিবেশন করা হয়।
 
তেমনি রাজনৈতিক বৈরী আবহাওয়াকেও তুলে ধরা হয়েছে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য/ ধ্বংসের মুখোমুখী আমরা’ কিংবা ‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত’ কবিতার মধ্যদিয়ে।

ফাগুনের প্রথম প্রহরে শাহবাগ, চারুকলা, টিএসসি এলাকায় বসন্ত বরণের আভাস অতোটা না পাওয়া গেলেও সকালের কাঁচাসোনা রোদে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসন্তি আমেজ পায় উৎসব প্রাঙ্গণ। হলুদ পাঞ্জাবি, শাড়ি পড়া তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোরদের ভীড় বাড়তে থাকে বকুলতলার উৎসবে। নাচে-গানে দোল খায় মন, রোমাঞ্চ আর উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে চারুকলা প্রাঙ্গণ। ভালবাসা, সম্প্রীতির বন্ধনের পাশাপাশি চলে আবির বিনিময়।
 
এছাড়া বাহারী পোশাকে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা ছিল চোখে পড়ার মতো।

বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বসন্ত কথন পর্বে বকুলতলার উৎসব মঞ্চে আসেন দুই বাংলার অতিথি শিল্পীরা। এসময় চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ও আহতদের প্রতি সম্মান এবং সমবেদনা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
 
বসন্তের পূর্ণতায় সব কালো আঁধার দূর করার আহ্বান জানিয়ে ওপার বাংলার (কলকাতার) সুরকার অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় উদযাপন পরিষতের সহ-সভাপতি স্থপতি সফিউদ্দিন আহমেদের হাতে তুলে দেন দুই বাংলার মৈত্রী প্রতীক।
 
মৈত্রী বিনিময়ের পর উদযাপন পরিষতের সহ-সভাপতি কাজল দেবনাথ বলেন, বসন্তের পূর্ণতায় আমাদের দেশের সার্বিক সঙ্কট কেটে যাক। পেট্রোল বোমা আর আগুনের অপমৃত্যুর মিছিল থেকে মুক্ত হোক বাংলাদেশের পূণ্যভূমি।
 
এবারের বসন্ত উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে বার্জার পেইন্টস (বিডি) বাংলাদেশ।
 
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চরুকলায় প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এছাড়াও রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক, লক্ষ্মীবাজার, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চ এবং উত্তরার ৩ নং সেক্টরের উন্মুক্ত মঞ্চে বসন্ত বরণের নানা আয়োজন করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বের  অনুষ্ঠান চলবে বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
 
বসন্ত বরণে এখনো মেতে আছে চারুকলার বকুল তলা প্রাঙ্গণ। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পর শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্বের বসন্ত বরণ।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫/আপডেট ১১২০ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।