ঢাকা: রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স ২০১৪- এ বাংলাদেশের অবস্থান যেভাবে দেখানো হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
ওই সূচককে সম্পূর্ণ বাস্তবতা বির্বজিত, ভিত্তিহীন, মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত বলেও দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী।
রোববার (১৫ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো তথ্যমন্ত্রীর বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্মরণকালের মধ্যে এখন সবচেয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। বর্তমান সরকারের আমলে সংবাদ মাধ্যম সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে এবং বিকাশ লাভ করেছে।
সম্প্রতি ফরাসি সংস্থা রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দেখানো হয় একশ’ ৪৬তম। একশ’ ৮০টি দেশের উপর ওই সূচক প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত সরকারের আমলের চেয়ে বর্তমান সরকারের আমলে দ্বিগুণের বেশি দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে।
এছাড়া দেশে এখন ২৬টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সম্প্রচারিত হচ্ছে, যেখানে সরকারি টেলিভিশনের সংখ্যা মাত্র তিনটি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে সম্প্রচারিত হচ্ছে ১১টি এফএম রেডিও।
শুধু তাই নয়, বর্তমান সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কণ্ঠস্বর হিসেবে ৩২টি কমিউনিটি রেডিওকে সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছে, যার মধ্যে ১৪টির পূর্ণ সম্প্রচার চলছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মহল বা ব্যক্তি মালিকানাধীন অসংখ্য পত্রিকা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।
সরকারের কঠোর বিরোধী জামায়াতের মালিকানাধীন দৈনিক সংগ্রাম, বিএনপির মালিকানাধীন দৈনিক দিনকালসহ বহুসংখ্যক বিরোধী মনোভাবাপন্ন পত্র-পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।
সংবাদপত্র বা ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার মতো কোনো আইন এ মুহূর্তে দেশে নেই উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারবিরোধী অবস্থান বা মতামতের জন্য কোনো সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকর্মীকে কখনো হয়রানির শিকারও হতে হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমার দেশ নামে পত্রিকাটি মালিকানা ও ছাপাখানা বিষয়ক মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় তাদের মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু অনলাইন সংস্করণ চালু রয়েছে। একই পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সরাসরি নাশকতার উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে বিচারাধীন রয়েছেন।
দিগন্ত মিডিয়া লিমিটেডের মালিকানাধীন দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচারও একই কারণে সাময়িক স্থগিত রয়েছে, যা আদালতে বিচারাধীন। তবে সরকার তাদের লাইসেন্স বাতিল করেনি। দিগন্ত মিডিয়া লিমিটেডের পত্রিকা দৈনিক দিগন্ত সম্পূর্ণ বাধাহীনভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। সুতরাং এক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই।
দেশে যখন গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা বিরাজ করেছে, তখন রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স বাংলাদেশের সঠিক চিত্র প্রতিফলনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণেই প্রতিষ্ঠানটির সূচকে প্রকাশিত বাংলাদেশের অবস্থান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণের পাশাপাশি বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মর্যাদাকে আরও উন্নীত করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৫