ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা-কলকাতা

বাধাহীন মৈত্রী এক্সপ্রেস

সুকুমার সরকার, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫
বাধাহীন মৈত্রী এক্সপ্রেস ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: অবরোধ-হরতালের কোনো প্রভাবই পড়েনি ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী রেল ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’। সে কারণে সপ্তাহের নির্ধারিত তিনদিনেই পুরো যাত্রী নিয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করছে।



যদিও মৈত্রী এক্সপ্রেস স্বাভাবিক চলাচল রুখে দিতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঈশ্বরদী রেলস্টেশনের কাছে নাশকতাকারীরা ওই ট্রেনের তিনটি বগিতে বোমা হামলা চালায়। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এদিন ঈশ্বরদীতে রেলইঞ্জিনে পানি ভরে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার পরেই বোমা হামলা হয়। পরে মৈত্রীকে ফিরিয়ে আনা হয় ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে। হামলার শিকার ইঞ্জিন পরীক্ষার জন্য রেখে দিয়ে আরেকটি ইঞ্জিন জুড়ে দিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয় ট্রেনটি।

ওই বোমা হামলা সত্ত্বেও সপ্তাহের নির্ধারিত সোম, মঙ্গল, বুধ, শুক্র ও শনিবার যথানিয়মেই মৈত্রী পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচল করছে।

গত নভেম্বর থেকে সপ্তাহে তিনদিন চলাচল করছে মৈত্রী এক্সপ্রেস। এর আগে ছিল সপ্তাহে দু’দিন। যাত্রীরা বার বার তাগিদ দেওয়ার পর বাংলাদেশ ও ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ সপ্তাহে একদিন বাড়তি রেল যোগ করে। যদিও যাত্রীদের দাবি ছিল, উভয় প্রান্ত থেকে সপ্তাহে ছয়দিন মৈত্রী চলাচলের।

এখন মৈত্রী এক্সপ্রেস রোববার সকালে কলকাতার চিৎপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে। সোমবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

কলকাতা থেকে ভারতের শেষপ্রান্ত গেদে ইমিগ্রেশন অবধি ইলেকট্রিক ইঞ্জিনে করে মৈত্রী আসে। দর্শনায় বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ ইলেকট্রিক ইঞ্জিন পাল্টিয়ে ডিজেলচালিত ইঞ্জিনে করে যাত্রীরা ঢাকায় আসেন।

কলকাতার চিৎপুর স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৭টা ৪০ মিনিট) মৈত্রী রওয়ানা হয়। আর ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল ৮টায় কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ৩৭৫ কিলোমিটারের এ পথ পাড়ি দিতে ১০ থেকে সাড়ে ১০ ঘণ্টা সময় লাগে।

দর্শনা-গেদে কাস্টমস-ইমিগ্রেশন সারতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। যদিও যাত্রীদের দাবি, উভয় অংশে মৈত্রী চলতি অবস্থায় কাস্টমস-ইমিগ্রেশন সারার। এতে সময় অনেকটা সাশ্রয় হবে।

১৯৬৫ সালের আগে খুলনা-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনেই সারা হতো কাস্টমস-ইমিগ্রেশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

ঢাকা থেকে সীমান্ত রেল স্টেশন দর্শনার দূরত্ব ২৫৫ কিলোমিটার। ভারতের গেদে স্টেশন থেকে কলকাতার চিৎপুর স্টেশনের দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার।   

বর্তমানে মৈত্রী বাদে সড়কপথে কলকাতায় যেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধের সঙ্গে হরতাল থাকায় সড়ক পথে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, কলকাতা যাওয়া। ঢাকায় যানবাহন চললেও দূরপাল্লার বাস চলাচলের সংখ্যা নগন্য। বিপদে পড়েই অনেককে যেতে হয়। আর এই সুযোগে বাসের ভাড়া দ্বিগুণ, তিনগুণ আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

অপরদিকে, বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যেতে মৈত্রীর ননএসি চেয়ারকোচের ভাড়া ৬৬০ টাকা, এসিচেয়ার কোচে ১,১৩৩ টাকা এবং এসি কেবিন ভাড়া ১,৮৮৬ টাকা। এসি সিঙ্গেল কেবিনে ৩ জন ও এসি ডবল কেবিনে ৬ জন বসার ব্যবস্থা রয়েছে।

২০০৮ সালে উদ্বোধনের সময় যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল, সাতবছর পার হলেও ভাড়া সেই একই রয়েছে। এ কারণে কলকাতাগামী যাত্রীরা মৈত্রী এক্সপ্রেসের দিকেই ঝুঁকছেন।

মৈত্রীতে এসির চাহিদাই বেশি থাকে সব সময়। সে কারণে ২০/২২ দিনের আগে এসির টিকেট পাওয়া যায় না। নন-এসির টিকেট ৫/৬ দিন আগেই মেলে।

ঢাকা রেল ভবনের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, তারা কোনো টিকেট রিজার্ভে রাখেন না। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে টিকেট দেওয়া হয়। এ কারণে আসন কখনোই খালি থাকে না।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।