ঢাকা: আড়াই বছরের ফুটফুটে শিশু মিথিলা। মশার কামড়ে ফর্সা মুখখানিতে কালচে দাগ ফুটেছে।
সকালে উঠেই তাড়া। আদালতে যেতে হবে। পুলিশের দেয়া কয়েক টুকরো পাউরুটি আর কলা খেয়েই প্রস্তুতি শুরু আদালতে যাত্রার। লেগুনায় মিথিলার সহযাত্রী মা ছাড়াও অপর এক নারী আর চার জন পুরুষ হাজতি।
র্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর থেকেই গোটা একটি দিন হাজতে এই শিশুটির কেটেছে রুদ্ধশ্বাস তিক্ত অভিজ্ঞতায়।
বিকেলে আদালতে তোলা হয় কয়েক পুরিয়াসহ গাঁজাসহ আটক মাসুদাকে (৪৫)। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হক শ্যামল জামিন নামঞ্জুর করে মাসুদাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সঙ্গে মায়ের কোলে থাকা শিশু মিথিলাকেও যেতে হয় চার দেয়ালে বন্দি কারাগারে।
গত সোমবার সাভারের মাদক পল্লী হিসেবে পরিচিত আমিনবাজারের বড়দেশি গ্রামে গাঁজা বিক্রির সময় র্যাবের হাতে আটক হন মাসুদা। সবে দুদিন হয় এসেছিলেন এই পেশায়! স্বামী পরিত্যক্তা মাসুদা প্রতিদিন হাজার টাকার গাঁজা কিনে তা ৫০ ও ১শ’ টাকার পুরিয়া করে বিক্রি করতেন। দিন শেষে চার থেকে ৫শ’ টাকা আয় হতো তার।
মাদক বিক্রির পথে নামার মাত্র তৃতীয় দিনের মাথায় র্যাবের অভিযানে ধরা পড়েন তিনি। সে সময়ে কোলে থাকা অবুজ শিশু মিথিলাসহ তাকে নেয়া হয় মিরপুরে র্যাব-৪’র কার্যালয়ে। শিশুটির দায়িত্ব নেয়ার মতো পরিবারে তেমন কোন সদস্য না থাকায় শেষমেষ বিনা দোষেই মায়ের সঙ্গে জেল খাটতে হচ্ছে নিষ্পাপ এই শিশুটিকে।
সাভার মডেল থানার ডিউটি অফিসার দুলুমা বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, মাদক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলাটি জামিন অযোগ্য, বিধায় শিশুটিকে হয়তো কিছু দিন মায়ের সঙ্গেই থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫
** মায়ের সঙ্গেই হাজতে যাচ্ছে শিশু মিথিলাও!