রংপুর: চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, দানবের সঙ্গে মানবের কোনো সংলাপ হতে পারে না।
মন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কিসের সংলাপ? যারা হরতাল-অবরোধের নামে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চায়, তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়।
মঙ্গলবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জের ঝাড়বিশলা ঈদগাহ মাঠে কবি কাজী হেয়াত মামুদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর জামায়াত-বিএনপিসহ ২০দলীয় জোট অহিংস আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সহিংস আন্দোলন করছে।
নির্বাচনের আগেও বিএনপি-জামায়াত যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের সেই সন্ত্রাসকে ঠেকিয়ে জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় বসিয়েছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, এখন সরকারের সাফল্যে তাদের গায়ে জ্বালা ধরে গেছে। তাই তারা আবারও হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। বার্ন ইউনিটে মানুষের আহাজারি তাদের কানে যায় না।
শাজাহান খান বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নিজে লেখাপড়া করতে না পেরে হরতাল দিয়ে পরীক্ষা বন্ধ করতে চান। হরতাল ডেকে তারা মাঠে থাকেন না। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য মানুষ হত্যা করা এবং পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটানো।
খালেদা জিয়া জামায়াত-শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে হরতাল-অবরোধের নামে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের গ্লানি ঢাকতে তারা এদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র বানাতে চান। তাদের এ স্বপ্ন কোনো দিন পুরণ হবে না।
সভায় মন্ত্রী জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করুন এবং জামায়াত-বিএনপি জোটকে মোকাবেলা করুন।
মন্ত্রী আরও বলেন, চরিত্র পরিবর্তন হয় না, জামায়াত ৭১ সালে শান্তি কমিটি, মুজাহিদ কমিটি গঠন করে লাখ লাখ মানুষকে মেরেছে, পাকিস্তানকে সহায়তা করেছে। এখন ২০ দলীয় জোটকে সঙ্গে নিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আপনাদের এলাকার মঙ্গা দুর করেছেন, এখন আপনাদের দায়িত্ব নাশকতা ঠেকাতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা।
এর আগে ঢাকা থেকে মন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে সকাল সাড়ে ১১টায় পীরগঞ্জের ঝাড়বিশলা ঈদগাহ মাঠে নেমে কবির মাজার জিয়ারত করেন। পরে তিনি আলোচনা সভায় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এমপি, ইউনুস আলী সরকার এমপি, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার দিলোয়ার বখত, রংপুরের জেলা প্রশাসক ফরিদ আহম্মেদ, রংপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছায়াদৎ হোসেন বকুল, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহারুল হক বাবলু, সম্পাদক তাজিমুল ইসলাম শামীম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোনায়েম সরকার মানু, কবি পরিবারের অষ্টম বংশধর শর্মিলী আকতার, ঝাড়বিশলা হায়াতুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস ছালেক সরকার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামছুল হকসহ আরও অনেকে।
আলোচনা সভা শেষে কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে হামদ-নাত ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বাদ আসর মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
১৬৮০ থেকে ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দের কোনো এক সালে ঝাড়বিশলা গ্রামে কবি কাজী হেয়াত মামুদ জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৬০ থেকে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনো এক সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বাবার নাম শাহ কবির ও মায়ের নাম খায়রুন নেসা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫