ঢাকা: মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তাগাদার পর তোড়জোড় শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এক্ষেত্রে চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসকেই টার্গেট করে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা আঁটছে ইসি।
সূত্র জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রী তাগাদা দেওয়ার পর ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে এক বৈঠক করেছে ইসি। বৈঠকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সীমানা পুনর্নিধারণ করে মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেট বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী ও ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অন্য দুই জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত না থাকায় চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত তারা নেননি। বুধবার গেজেট এলে আনুষ্ঠানিকভাবে আবারো বৈঠক করবে কমিশন।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক এবছর কোন কোন সময় নির্বাচন করা যাবে না সে বিষয়ে একটি তালিকা প্রস্তুত করেছেন। তিনি ইউও নোটের মাধ্যমে সিইসিকে সে তালিকায় উল্লেখিত সময়ে নির্বাচন না করার অনুরোধও করেছেন। সে তালিকা অনুযায়ী আগামী ১৯ জুন (চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল) থেকে রোজা শুরু হবে।
সেক্ষেত্রে রোজা ও ঈদের জন্য ২০ জুলাই পর্যন্ত ছুটি থাকবে। আর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে জুনের প্রথমার্ধে। এজন্য এপ্রিল-মে মাসে পাবলিক পরীক্ষার (যদি থাকে) ফাঁকে ফাঁকে এ নির্বাচনটি করার কথা ভাবছে কমিশন।
এদিকে, মঙ্গলবার সিইসির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্তকরণ ও তথ্য যাচাইয়ের বিষয়ে সিইসিকে একসেট বই দিতে এসেছিলাম।
এইচএসসি পরীক্ষা যথাসময়ে হবে, পেঁছানো হবে না। এপ্রিল মাসে এ পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার সময়ও নির্বাচন হতে পারে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কেননা, নির্বাচনী আচরণবিধিতেই বলা রয়েছে কখন প্রচারণা চালানো যাবে।
গত ২৫ জানুয়ারি ডিসিসি নির্বাচনের জন্য ৪৫ কোটি টাকা বাজেট চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব (অর্থ বিভাগ) মাহবুব আহমেদকে চিঠিও দিয়েছেন ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম। ওই চিঠিতে চলতি অর্থ বছরেই নির্বাচন সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেছেন, পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমরা নেবো না। তবে, সীমানা নির্ধারণের গেজেট না আসায় এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। গেজেট এলেই কেবল আনুষ্ঠানিক আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ২৮ জানুয়ারি সীমানা নির্ধারণের গেজেটটি করেছে মন্ত্রণালয়। এটি বিজিপ্রেসের ওয়েব সাইটে রয়েছে। তবে, এ সম্পর্কে ইসিকে কিছু জানানো হয়নি।
বর্তমান কমিশন ২০১২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর একই বছর ৯ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করে ২৪ মে ভোটগ্রহণের তারিখ ধার্য করেছিল। কিন্তু উত্তর সিটিতে সীমানা জটিলতা নিয়ে রিট আবেদনের কারণে এ নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।
এখন ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণে প্রশাসক দিয়ে কাজ চালাচ্ছে সরকার। সর্বশেষ ডিসিসি নির্বাচন হয়েছিলে ২০০২ সালে ২৫ এপ্রিল। নির্বাচিত কর্পোরেশনের মেয়াদ শেষ হয় ২০০৭ সালের মে মাসে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে অন্তর্ভূক্ত ওয়ার্ড ভিত্তিক নতুন এলাকাগুলোর গেজেট দেখতে ক্লিক করুন:
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫