ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কর্তৃক জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন।
বুধবার(১৮ ফেব্রুয়ারি’২০১৫) রায় ঘোষণার পর ট্রাইব্যুনাল এলাকায় দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে এ রায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে মুহূর্তে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস হামলা চালিয়ে এবং বাংলাদেশে জামায়াত শিবির চক্র পেট্রোল বোমায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করছে। সেই মুর্হূর্তে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্মের নামে অপরাধ করা সুবহানের রায় অনেক তাৎপর্যপূর্ণ।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাবনা জেলায় যুদ্ধাপরাধের হোতা সুবহানের বিরুদ্ধে আনা ৯টি মানবতাবিরোধী অভিযোগের মধ্যে গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ষড়যন্ত্রের ৬টিই প্রমাণিত হওয়ায় সুবহানকে সর্বোচ্চ এ দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন’১৯৭৩ এর ৩(২)(এ), ৩(২)(সি), ৩(২)(জি), ৩(২)(এইচ), ৩(২)(আই), ৪(১), ৪(২) এবং ২০ (২) ধারায় আনা এসব অভিযোগের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের রায়ে ৬টি প্রমাণিত হয়েছে এবং বাকি ৩টি প্রমাণিত হয়নি।
প্রমাণিত ১, ২, ৩, ৪, ৬ ও ৭ নম্বর- এ ৬টি অভিযোগের মধ্যে ১, ৪ ও ৬ নম্বর অর্থাৎ ৩টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ, ৬ ও ৭ নম্বর অর্থাৎ ২টি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৩ নম্বর অভিযোগে আরও ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে তাকে।
অন্যদিকে ৫, ৮ ও ৯ নম্বর- এ ৩টি অভিযোগ প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি বলে উল্লেখ করে এসব অভিযোগ থেকে সুবহানকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহীনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। বেলা এগারোটা ১৫ মিনিটে সুবহানের মামলার রায় ঘোষণা শুরু হয়ে বেলা এগারোটা ৫০ মিনিটে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত ভূমিকা শেষে ১৬৫ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫