ঢাকা: রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের জন্য ১৫ দিনের সময় থাকলেও রাষ্ট্রপক্ষ এ সময়ের জন্য অপেক্ষা করবেন না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
তিনি বলেন, ধরেন কেউ যদি রিভিউ না করে।
বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তিনি একথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কামারুজ্জামানের মামলার ব্যাপারে আমাদের এতোদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটলো। রায় পাওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল পরোয়ানার আদেশ জেলে পাঠালে সরকারের পক্ষে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন দিতে কোনো অসুবিধা নেই।
তবে যদি তার পক্ষ থেকে রিভিউ দায়ের করা হয়, তাহলে মৃত্যু পরোয়ানার কার্যকারিতা স্থগিত হয়ে যাবে।
মাহবুবে আলম বলেন, রিভিউয়ের ১৫ দিনের হিসাব আজ (বুধবার) থেকেই শুরু হবে। এই ১৫ দিন রাষ্ট্রকে করতে (অপেক্ষা) হবে বলে আপিল বিভাগ রিভিউয়ের রায়ে বলেন নাই। তবে রিভিউ আবেদন দায়ের করলে দণ্ডাদেশের কার্যকারিতা স্থগিত হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আজকের ভেতরে পূর্ণাঙ্গ রায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হবে। এরপর ট্রাইব্যুনাল কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা পাঠাবেন। সেটা ট্রাইব্যুনাল আজও করতে পারেন, কালও করতে পারেন। জেলখানায় পরোয়ানা গেলে তাকে প্রাণ ভিক্ষা করবেন কি-না, রিভিউ করবেন কি-না, এগুলো জানিয়ে দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, প্রাণভিক্ষার অধিকারটা সব সময় দেওয়া হয়। রিভিউয়ের আগেও তিনি চাইতে পারেন। তবে স্বাভাবিকভাবে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রাণভিক্ষা চাওয়ার নিয়ম।
বুধবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি(বর্তমান প্রধান বিচারপতি) এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ এ রায় দিয়েছেন। বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হচ্ছেন বিচারপতি আব্দুল ওহাব মিয়া, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
দুপুর একটা ৫৫ মিনিটে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে ৫৭৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়। এর আগে বেলা সাড়ে বারোটার দিকে চার বিচারপতি রায়ে স্বাক্ষর দেওয়া শেষ করেন।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের দিন থেকে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করার জন্য ১৫ দিনের সময় পাচ্ছেন আসামিপক্ষ। এ দিন গণনা শুরু হয়েছে বিচারপতিদের পূর্ণাঙ্গ রায়ে স্বাক্ষরের পর থেকেই।
এখন পূর্ণাঙ্গ রায়টি আপিল বিভাগ থেকে বিচারিক আদালতে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) পাঠানো হবে। এরপর ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবেন। তারপর এ পরোয়ানা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে কারাগারে যাবে। পরবর্তীতে কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি কামারুজ্জামানকে অবহিত করবে।
এরপর দণ্ডপ্রাপ্ত কামারুজ্জামান ইচ্ছা করলে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারবেন। ক্ষমা না চাইলে ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না।
আর যদি রিভিউ আবেদন করেন তাহলে সেজন্য ১৫ দিন সময় পাবেন আসামিপক্ষ। রিভিউ নিষ্পত্তির পর নিয়ম অনুসারে বাকি কাজগুলো সম্পন্ন হবে।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী শিশির মনির জানিয়েছেন, রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পরে মক্কেলের(কামারুজ্জামান) সঙ্গে আলাপ করে রিভিউয়ের বিষয়ে জানাবেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫/আপডেট : ১৬৫৩ ঘণ্টা
** রিভিউ আবেদন করলে ১৫ দিন গণনা শুরু