ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় তিনি পুরোটা সময় ছিলেন নির্লিপ্ত।
বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়ে এ রায় ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।
বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে সুবহানের মামলার রায় ঘোষণা শুরু হয়ে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে শেষ হয়।
এর আগে সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে সুবহানকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানা থেকে এজলাসের আসামির কাঠগড়ায় ওঠানো হয়। এ সময় সুবহানের পরনে ছিল সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি ও সোয়েটার, মাথায় সাদা টুপি, হাতে লাঠি (ভর দিয়ে চলেন) ও চোখে চশমা।
এরপর বেলা ১১টা ৩ মিনিটে এজলাসকক্ষে আসেন তিন বিচারপতি।
বেলা ১১টা ১৫ মিনিট থেকে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করে সুবহানের মামলার ১৬৫ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ ঘোষণা শুরু করেন চেয়ারম্যান ওবায়দুল হাসান।
বিচারপতিরা এজলাসে প্রবেশের পর সুবহানকে ট্রাইব্যুনালের দিকে বেশ মনোযোগী হয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর তাকে এদিক ওদিক তাকিয়ে ট্রাইব্যুনালের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতেও দেখা যায়।
রায় ঘোষণার পুরোটা সময় আব্দুস সুবহান কাঠগড়ায় পায়ের ওপর পা রেখে বসে থাকেন।
বেলা ১১টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত সুবহানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ৯টি অভিযোগের বিভিন্ন বিষয় রায়ে তুলে ধরেন ট্রাইব্যুনাল। এ সময় সুবহানকে একবার পানি পান করতেও দেখা যায়।
সুবহানের বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগ প্রমাণিত ও ৩টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি ঘোষণা শেষে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে দণ্ড ঘোষণা শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান। এ সময় ৫ মিনিট চোখ বন্ধ রেখে রায় পড়া শুনছিলেন সুবহান।
গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ষড়যন্ত্রের ৬টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে তাকে সর্বোচ্চ সাজার আদেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড ও ২টি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও একটি অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল।
এ সময় কোনো কথা না বলে নির্লিপ্ত ছিলেন যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা সুবহান। বিচারকরা এজলাস ত্যাগ করলে তাকে আবার ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখান থেকে বেলা বারোটা ৩৫ মিনিটে ফের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় সুবহানকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫