ঢাকা: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ্ন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট (ইপি) প্রতিনিধি দল।
এ ছাড়া বুধবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দলের বক্তব্য সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তার প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের কাছে এ ক্ষোভের কথা জানান তারা।
বর্তমানে ক্রিশ্চিয়ান ড্যান প্রিডার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট (ইপি) প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছেন। ইপি প্রতিনিধি দল প্রধান ক্রিশ্চিয়ান ড্যান প্রিডা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আমরা অবশ্যই উদ্বিগ্ন। আমরা এই জন্যই বাংলাদেশে এসেছি।
তিনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বুধবার তাদের সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রতিনিধিদলের হাতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য সংবলিত একটি ইংরেজি দৈনিকের কপি দেখতে পাওয়া যায়।
এদিকে, মানবাধিকার কমিশন সূত্র জানায়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বুধবার দেওয়া বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং প্রতিনিধি দল এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, তা আমাদের বৈঠকে পর্যন্ত প্রভাব ফেলেছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সহিংসতা বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দল।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে ন্যায় বিচারের দাবিতে হলেও সহিংসতা, পেট্রোল-বোমার মতো কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করেছেন তারা। গণগ্রেফতারের বিষয়ে ইপি প্রতিনিধি দল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দল (ইপি) গণগ্রেফতারের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশের শ্রমমান, রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান ড. মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, সরকারের এনজিও আইন সংশোধনের ফলে কর্মের সুযোগ কমে যাবে। শুধু তাই-ই নয়, এতে এনজিওর কাজের স্বাধীনতাও খর্ব হবে বলে মনে করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দল।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের জানান, ইইউ পার্লামেন্ট প্রতিনিধিদল মানবাধিকার বিষয়ে বিন্দুমাত্র উদ্বেগ জানাননি। তারা জানতে চেয়েছেন, এই বর্তমান সহিংসতা কবে শেষ হবে, কীভাবে শেষ হবে? আমরা পরিস্কারভাবে বলেছি, সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন তৃণমূল পর্যায়ে যে নিরাপত্তা বিধান করেছে, সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও সজাগ আছে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতিতে মহাসড়কগুলো চালু করতে পেরেছি।
বুধবার ইইউ পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে দেখার করার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি জানান, মানবাধিকার বিষয়ে ইইউ পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দলের বিন্দুমাত্র উদ্বেগ নেই।
তার এই বক্তব্যে ইইউ পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার তাদের ক্ষোভের কথা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫