ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মহেশপুরে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ডিস্টিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫
মহেশপুরে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় দশটি ইউনিয়নে শিলা ঝড়-বৃষ্টিতে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসল হারিয়ে কৃষকরা এখন হতাশ।



ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কাজ শুরু করেছেন।

প্রাথমিকভাবে ৩৫’শ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানালেও ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু তালহা বাংলানিউজকে জানান, বুধবার দিনগত রাত দুইটা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়। এর মধ্যে আটটি ইউনিয়ন সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি আরো জানান, শিলাবৃষ্টিতে মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর, নাটিমা, মান্দারবাড়িয়া, স্বরুপপুর, মহেশপুর পৌরসভা, বাশবাড়িয়া ও শ্যামকুড় উইনয়নে প্রাথমিক তদন্তে চার হাজার হেক্টর জমির ফসল ৯০ থেকে ৯৮ শতাংশ বিনষ্ট হয়েছে। তবে, ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।

কৃষি কর্মকর্তা আবু তালহা বাংলানিউজকে জানান, শিলাবৃষ্টিতে ২৫’শ হেক্টর জমির মুশুর, সাতশ হেক্টর জমির গম, তিনশ হেক্টর জমির ভুট্টা ও দুইশ হেক্টর জমির আমের বাগান ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাকি ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে।

এ ছাড়া জাম, লিচু, লাউ ও কলাসহ বিভিন্ন তরিতরকারির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো বিভিন্ন গ্রামে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিলার স্তর দেখা যাচ্ছে। ধানের ক্ষেত মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

মহেশপুর উপজেলার স্বরুপপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুলফিক্কার আলী বাংলানিউজকে জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত দুই হাজার জেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। জীবনে এমন শিলা ঝড় দেখেননি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

স্বরুপপুর গ্রামের কৃষক ইলাহী বকস বাংলানিউজকে জানান, তার কয়েক বিঘা জমির লাউ ক্ষেত ও আম বাগান শিলাবৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে।

একই গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম, আকতার হোসেন ও আনারুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, শিলার প্রকোপ এতটাই বেশি ছিল যে দুপুর পর্যন্ত শিলার স্তর পড়ে ছিল। শিলা বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়ায় স্বরুপপুর গ্রামের গম, তামাক, ধনিয়া, ভুট্ট, মশুর, লাউ, কলা ক্ষেত এবং আম ও লিচু বাগানের ৯৭ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।

মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমি নিজে নাটিমা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেছি। শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।

গাছগুলো দাঁড়িয়ে আছে পাতাবিহীন। ফসলের ক্ষেত মিশে গেছে মাটির সঙ্গে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ মো. আকরামুল হক বাংলানিউজকে জানান, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত পরিদর্শনে বর্তমানে মহেশপুর অবস্থান করছেন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি পরে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।