ঢাকা: ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জয়বাংলা বলে বাংলাদেশকে
শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি জয়বাংলা বলে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা ৫০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট-২৩০-এ করে মমতার নেতৃত্বে ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
বিমানবন্দরে মমতা ব্যানার্জিকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ। এসময় তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে হাসিমুখে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করে মমতা ব্যানার্জি কিছুটা হেঁটে সংবাদকর্মীদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে যান। বলেন, এরা কি বাংলাদেশের মিডিয়া? আমি একটু কথা বলি। এরপরই তিনি জয়বাংলা বলে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
এসময় তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ইমোশনাল রিলেশন (আবেগের সম্পর্ক)।
এ সফরকে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক আন্তরিকতা নিয়ে এসেছি। আশা করছি, এ সফর আনন্দদায়ক হবে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত একটি গানের চরণ উল্লেখ করে মমতা বলেন, আমরা জানি, বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের
বাংলাদেশ/জীবনানন্দের রূপসী বাংলা/রূপের যেন নেইকো শেষ...।
এসময় উপস্থিত সাংবাদিকরা মমতা ব্যানার্জিকে শুভেচ্ছা জানালে তার উত্তরে তিনি বলেন, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। বাংলাদেশে এসে আমি অনেক খুশি। আপনাদের সঙ্গে আবার দেখা হবে।
এরপর তাকে রাজধানীর প্যান-প্যাসেফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তিনদিনের সফরে ঢাকা এসেছেন।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর আমন্ত্রণে ঢাকা সফরে এসেছেন তিনি। বাংলাদেশে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন দেখার আগ্রহের কথা জানার পরই মমতাকে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মমতার বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টনসহ দু’দেশের দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা নানা বিষয় মিটে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতার সফরসঙ্গীদের অনেকেই।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর তালিকায় রয়েছেন-সেখানকার নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু, দীপক আধিকারী, এমপি, মুখ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র, অভিনেত্রী শতাব্দী রায়, কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা প্রমুখ। এছাড়া মমতার প্রতিনিধি দলে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রয়েছেন।
মমতা যখন বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান, তখন তার পরনে ছিল নীল পাড়ের সাদা শাড়ি ও সাদা চাদর। তাকে তখন বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছিল।
সফরকালে মমতা ব্যানার্জি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। মমতার সম্মানে চা-চক্রের আয়োজন করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।
মমতা ব্যনার্জি একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাও নিবেদন করবেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এফবিসিসিআই ও কলকাতার ভারতীয় চেম্বার অব কমার্সের সহযোগিতায় ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন।
পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন তার সম্মানে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫/আপডেট: ০৪২৪ ঘণ্টা
** মমতা ঢাকায়