ঢাকা: ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ছয় বছর পূর্ণ হলো। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলা রায় ঘোষণা হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি একদল বিপথগামি বিডিআর সদস্যদের হাতে পিলখানায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
ওয়ান ইলেভেনের জের কাটিয়ে ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার মাত্র দেড় মাসের মাথায় ওই বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান তৎকালীন ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই মামলায় বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৬২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া ২৭৭ জনের মধ্যে ৬৯ জন আসামির সাজা চেয়ে ফৌজদারি আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দায়ের করে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত ৪১০ জন আসামির সাজা বাতিল চেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আপিল দায়ের করেন তাদের আইনজীবীরা।
গত ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে উক্ত ফৌজদারী আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। তবে গত দুই বছর একই অবস্থানে রয়েছে একই ঘটনায় দায়ের করা বিষ্ফোরক মামলার বিচার।
আদালতের পেশকার ইফতেখার বাংলানিউজকে জানান, বিষ্ফোরক মামলায় এ পর্যন্ত ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তবে বাদীর সাক্ষ্য এখনও শুরু হয়নি। আগামি ১২ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
হত্যাকাণ্ড মামলায় রায় ঘোষণার পর এ মামলায় আর নতুন করে কোন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। এজলাস বিচারের জন্য প্রস্তুত নয় অজুহাতে মামলায় একের পর এক তারিখ পড়েছে। এখন হরতাল অবরোধের জন্য আসামি এজলাসে না আনায় সাক্ষ্যগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলিশের পরিদর্শক নবজ্যোতি খীসা প্রথমে লালবাগ থানায় এবং পরে নিউমার্কেট থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর দুই হাজার একশ’ ৮৭ জনকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ৫২১ আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরবর্তীতে ১২৫ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন।
ঘটনাটি তদন্ত করে ২০১০ সালের ১২ জুলাই হত্যা মামলায় ও ২৭ জুলাই বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় পাঁচশ’ ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ।
বিডিআর বিদ্রোহের পর ২০১০ সালের ১২ জুলাই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-এর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। ওই বছরেরই ৮ ডিসেম্বর ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিল-২০১০’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২৬ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের পর বাংলাদেশ রাইফেল্স (বিডিআর) হয়ে যায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাংলাদেশ সময় ০১৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫