ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের যে কোনো পদক্ষেপ সরকারের পতনকেই তরান্বিত করবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০ দলীয় জোটের পক্ষে তিনি এ দাবি করেন।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, ফ্যাসিবাদী একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েমের পথে প্রধান অন্তরায় জাতীয়তাবাদী শক্তির আস্থার প্রতীক, গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের আপসহীন নেতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অবৈধ স্বৈরশাসক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
তিনি বলেন, দলীয়করণ, কুক্ষিগতকরণ, নগ্ন-হস্তক্ষেপ ও বিচারক অভিশংসন আইন পাস করিয়ে সরকার দেশে বিচারিক নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে বিরোধীদল ও মতকে দমনের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। তারই অংশ হিসেবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশবাসী, আন্তর্জাতিক মহলসহ সবাই জানেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সরকার অঘোষিতভাবে গৃহবন্দি অবস্থায় রেখেছে, যেখানে দীর্ঘ দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খাদ্য সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।
এখন পর্যন্ত তিনি (খালেদা জিয়া) টেলিফোন, ফ্যাক্স, ক্যাবল সংযোগ ও নেটওয়ার্কসহ সব বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। আদালতের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, ইতোপূর্বে, আদালতে যাওয়ার পথে দেশনেত্রীর গাড়ি বহরে পুলিশি সহায়তায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে দলের অনেক নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা। অথচ সেই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, এখন পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে আদালতে উপস্থিত হতে অপারগতার কথা আদালতকে জানানোর পরও সরকারি প্রভাবে দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
সম্পূর্ণ হীন-রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মানসে সরকার এ জাতীয় মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রীকে হয়রানি করার ঘৃণ্য চক্রান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ জোর দিয়ে বলেন, মামলা-হামলা-গ্রেফতারের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলমান গণআন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবেনা।
তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সারাদেশ থেকে ২০ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে এবং তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে শত শত নেতাকর্মীকে হতাহত করেও গণআন্দোলনকে দমাতে পারেনি সরকার।
অবৈধ গদি রক্ষার শেষ চেষ্টা হিসেবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের যেকোনো পদক্ষেপ বরং সরকারের পতনকেই তরান্বিত করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অবরুদ্ধ গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার, মৌলিক ও মানবাধিকার, বাক-ব্যক্তিস্বাধীনতা ও আইনের শাসনের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে দেশের সর্বস্তরের জনগণ আজ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। সংগ্রামী জনতার ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলমান গণআন্দোলন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে।
এদেশের সংগ্রামী জনগণের ইতিহাস আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাস।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫
